চতুর্দশ পরিচ্ছেদ brs) উত্তর হইল, “সুড়ঙ্গপথে কে আলোক আনিল বুঝিত্বে পারিতেছি না।” “হয় ত ইন্দ্ৰলেখার দাসী ” “প্ৰভু, ইন্দ্ৰলেখা বাৰ্তাত পাটলিপুত্র নগরে আর কোন রমণী নাই যে, রাত্রিকালে এই সুড়ঙ্গপথে প্রবেশ করিতে ভরসা করিবে। আপনারা এই স্থানে অপেক্ষা করুন, আমি দেখিয়া আসি।" মুরারি অগ্রসর হইল, মহারাজ-পুত্র বস্ত্রমধ্য হইতে দীর্ঘ কৃপাণ বাহির করিয়া তাহা কোষমুক্ত করিলেন এবং প্রাচারে পৃষ্ঠ দিয়া দণ্ডায়মান হইলেন। ক্ষণকাল পরে দীপ নিৰ্বাপিত হইল এবং মুরারি ফিরিয়া আসিয়া কঠিল, “প্ৰভু, কুকুটারামের নিয়ে সোপানে কে প্রদীপ রাখিয় গিয়াছিল, তাহা নিবাইয়া দিয়াছি, কোন মানুষ দেখিলামু না, অগ্রসর ইউন ৷” তিন জনে পুনরায় চলিতে আরম্ভ করিলেন, এবং অল্পকাল পরে সোপানশ্রেণীতে আরোহণ করিলেন । সোপানশ্রেণী একটি বৃহৎ পাষাণনিৰ্ম্মিত বৃহৎ চৈত্যের গর্ভে শেষ হইয়াছিল। চৈতোর গর্ভে বেদীর উপরে তাম্রনিৰ্ম্মিত বুদ্ধমূৰ্ত্তির সম্মুখে ঘুতের প্রদীপ জলিতেছিল, মুরারি অগ্রবর্তী হইয় তাহ নিৰ্ব্বাপিত করিল। ঋষভদেব চৈত্য-গভ হইতে নিস্ক্রান্ত হইয়া দেখিলেন যে, তাহারা বিশাল কুকুটারামের প্রশস্ত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হইয়াছেন। প্রাঙ্গণের মধ্যস্থলে গগনস্পর্শী কুকুটবিহার এবং তাহার চতুর্দিকে সহস্ৰ সহস্র ক্ষুদ্র বিহার। তাহার চারিদিকে পরিক্রমণের পথ, পথের অপরপাশ্বে উষ্ঠান। সকলে চৈতা-গর্ভ ত্যাগ করিয়া অন্ধকারময় বৃক্ষতলে আশ্রয় গ্রহণ করিলেন। বিহার-প্রাঙ্গণ তখন জনশূন্ত, কেবল মূল বিহারের গর্ভ গৃহে একজন বর্ষীয়ান ভিক্ষু কুশাসনে উপবেশন করিয়া গ্রন্থ পাঠ করিতেছিলেন। মহারাজ-পুত্র ও র্তাহার সঙ্গীদ্বয় যে সময়ে চৈত্য-গর্ভ ত্যাগ করিয়া উদ্যানে প্রবেশ করিলেন, সেই সময়ে একজন ভিক্ষু বিহারের গর্ভগৃহে প্রবেশ করিয়া উপবিষ্ট ভিক্ষুকে প্রণাম করিল। তিনি মুখ না তুলিয়াই জিজ্ঞাসা করিলেন, “আসিয়াছে ?”
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৯৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।