ॐ ९ করুণা ধৰ্ম্মশাস্ত্ৰ। তোমার জন্য রাজ্যসম্পদ বিসর্জন দিয়া প্রাসাদের পরিবর্তে কুটীরে বাস করিতে চাহিয়াছিলাম। সমুদ্রগুপ্তের পৌত্র, চন্দ্রগুপ্তের পুত্র, গণিকার কন্যাকে বিবাহ করিতে উষ্ঠত হইয়াছিল,—তাহা কি বিস্তৃত হইয়াছ ; কিন্তু গণিকার কন্যা বারলনিতার ধৰ্ম্ম বিস্কৃত হয় নাই। অবলীলাক্রমে সম্রাটু-পুত্রকে বিসর্জন দিয়া বেগু-পুত্রের সহিত পলায়ন করিয়াছিল, তাহা কি বিস্তুত হইয়াছ ? আমি যে দিন শেষ সাক্ষাৎ প্রার্থনা করিয়াছিলাম, সে দিন কুকুম সুরভির পরিবর্তে এই কদম্বমূলে বেঙ্গাপুত্র ফন্তুঘশের অসি আমার কণ্ঠলিঙ্গন করিতে আসিয়াছিল, আমি তাঙ্গ বিস্তৃত ङई नाझे ” । বহুক্ষণ নিঃশব্দে রোদন করিয়া রমণী অবশেষে কহিল, “মঙ্গরাজ-পুত্র, যৌবনে যে অপরাধ করিয়াছি—আজীবন তাহার প্রায়শ্চিত্ত করিতেছি, ইচ্ছা করিয়া রাজ্য-সম্পদ জলাঞ্জলি দিয়াছি । আমার বহু অনুরোধ রক্ষ। করিয়াছ আর একটি অনুরোধ রক্ষা কর। এই শেষ অনুরোধ, আর একবার তেমন করিয়া তোমার মুখখানি দেখিব।” অনুরোধ শ্রবণ করিয়া মহারাজ-পুত্র শিহরিয়া উঠিলেন, তখন অবসর বুঝিরা রমণী তাহার হস্তদ্বয় ধারণ করিল। গোবিন্দগুপ্ত পুনরায় শিহরিয়া উঠিলেন, কিন্তু হস্ত-মোচনের চেষ্টা করিলেন না। রমণী তাহা দেখিয়া ধীরে ধীরে তাহার কণ্ঠলিঙ্গন করিল। এইবার গোবিন্দগুপ্ত শিহরিয়া উঠিয়৷ দূরে সরিয়া দাড়াইলেন এবং ভগ্নকণ্ঠে কহিলেন, “ছি ইন্দ্ৰলেখা, আর না।" ইন্দ্রলেখা নিকটে আসিয়া পুনরায় তাহার হস্তদ্বয় ধারণ করিল এবং কহিল, “আর একবার মহারাজ-পুত্র, আর কখনও কোন অনুরোধ করিব না।” তখন কিঞ্চিৎ প্রকৃতিস্থ হইয়া গোবিন্দগুপ্ত কহিলেন, “ইন্দ্রলেথ, তোমার অনুরোধ রক্ষা করিব কিন্তু তাহার মূল্য দিতে হইবে।” ইন্দ্ৰলেখা উৎসুক হইয়া কহিল, “কি মূল্য, বল, আমার এমন কি আছে যাহা তোমাকে অদেয় ?” ঈষৎ হাস্ত করিয়া গোবিন্দগুপ্ত কহিলেন,
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৯৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।