রাজনীতি-কৌশল, নির্ভীকতা ও দৃঢ়তার বলেই যে ইংলণ্ড এই বিশাল ভারতসাম্রাজ্য স্বর:শ আনয়ন করিতে সমর্থ হইয়াছে, তাহাতে মতদ্বৈব হইতে পারে না। সেই সম্পর্কে এই কলিকাতা নগরে যে সকল অতি গুরুতর ঘটনার সজ্জন হইয়াছে, তাহা অগতের ইতিহাসের একটি অতীব প্রয়োজনীয় অধ্যায় অধিকার করিয়াছে।
যে স্থানটি এক্ষণে বৈঠকখানা-বাজার নামে পরিচিত, সেই স্থানে এক প্রকাণ্ড বটবৃক্ষের ছায়াতলে উপবিষ্ট হইয়া যে দিন ইংরেজ বণিদিগের তদানীন্তন এজেণ্ট (প্রতিনিধিস্বরূপ কর্ম্মকর্ত্তা) জব চার্ণক সাহেব চিন্তাবিত ভাবে তাঁহার হুক (ফরসী) হইতে ধূমপান করিতে করিতে কলিকাতাই তাঁহার বণিকপ্রভু দিগের বাণিজ্য-ব্যবসায়ের পক্ষে সর্বাপেক্ষা সুবিধাজনক স্থান হইবে বলিয়া মনোনীত করেন, সে দিন তিনি স্বপ্নেও ভাবেন নাই যে, তিনি তাহার স্বদেশীয়দিগের নিমিত্ত এক বিশাল সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করিতেছেন। তৎকালে পাশ্চাত্যজনগণের একটি ভ্রান্ত ধারণা ছিল যে, ভারতবর্ষের মৃত্তিকায় এক প্রকার সুবর্ণময় দেববৃক্ষ (কল্পতরু) জন্মে। সেই কল্পতরু নাড়া দিয়া সুবর্ণ সংগ্রহ করাই জব চার্থক-প্রমুখ ইংরেজগণের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল। এই নির্বাচন হইতে উত্তরকালে যে এইরূপ শুভফল হইবে, তাহা তিনি কল্পনাতেও মনে স্থান দেন নাই। কোন ভারি ভাবিভাগ্য-ফল গণনা করিয়া স্থির করা বড় সহজ কার্য নয়। ভবিষ্যতের অবগুণ্ঠনের পশ্চাদ্ভাগে বিবিধ শক্তি ক্রিয়া করিতে থাকে। তাহাদের ফলাফল নির্ণয় করা প্রগাঢ় ধীশক্তিসম্পন্ন ও অস্তদশী মানবের সাধ্যাতীত। পরে কালক্রমে যখন তাহারা পরিপুষ্ট