প্রাচ্য-শিক্ষার পক্ষপাতীদিগের বিরুদ্ধে প্রবল যুক্তিপূর্ণ প্রতিপক্ষরূপে উপস্থিত হইল। মেকলে সাহেব আপনার মন্তব্যের উপসংহারে যে অভিপ্রায় প্রকাশ করিয়াছেন, তাহার মর্মার্থ এইরূপঃ—
“আমার বোধ হয়, ইহা, স্পষ্টই বুঝা যাইতেছে যে, ১৮১৩ অব্দের পার্লেমেণ্টের আইন আমাদের হস্তপদ শৃঙ্খলাবদ্ধ করিয়া রাখে নাই; স্পষ্ট ভাষায় ব্যক্ত হউক বা ভাবধারা অনুমেয়ই হউক, কোনও প্রকার প্রতিজ্ঞাও আমরা শৃঙ্খলাবদ্ধ নহি। আমাদের ভণ্ডের টাকা আমরা ইচ্ছানুরূপ নিয়োজিত করিতে পারি; সর্ব্বা পেক্ষা যাহা জানিবার অধিক উপযুক্ত, তাহার শিক্ষাদানেই সে অর্থ নিয়োজিত করা আমাদের উচিত। সংস্কৃত বা আরবী অপেক্ষা ইংরেজীই জানিবার অধিক উপযুক্ত; এতদ্দেশীয় লোকেও ইংরেজী শিখিতে চায়; সংস্কৃত বা আরবী শিখিতে চায় না। আইনের ভাষা বলিয়াই বা কি, আর ধর্মের ভাষা বলিয়াই বা কি, সংস্কৃত বা আরবী আমাদের উৎসাহ লাভের কোনও বিশেষ স্বত্বের অধিকারী নয়; এদেশীয়দিগকে ইংরেজী বিদ্যায় যৎপরোনাপ্তি সুপণ্ডিত কর সম্ভবপর, অতএব সেই উদ্দেশ্যেই আমাদের যত্ন করা কর্তব্য।”[১]
লর্ড হালিফাক্সের প্রেরিত ডোস্প্যাচ (আদেশ-পত্র) অবলম্বন করিয়া বর্তমান শিক্ষাপ্রণালী প্রবর্তিত হইয়াছে। লর্ড ডালহাউসির শাসনকালে পুরান হিন্দুকলেজ বর্তমান প্রসিডেন্সি কলেজে পরি- বর্তিত হইয়াছে। তদবধি নীতিবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, তর্কশাস্ত, প্রাকৃতিক জ্ঞান প্রভৃতি পাঠরূপে নির্দিষ্ট হইয়াছে। ১৮৫৭ সালে
- ↑ পরলোকগত রাজা রামমোহন রায়ও এই সময়ে ইংরাজী শিক্ষার পক্ষ সমর্থন করিয়া গভর্ণর জেনারেলের নিকট আবেদনপত্র প্রেরণ করেন।