পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম অধ্যায়।
১৯৩

পর যাহা অবশিষ্ট পাকিত, এরূপ বহুবিধ স্বদেশোৎপন্ন ও প্রস্তুতীকৃত দ্রব্য পুর্বকালে সওদাগর ও বণিকগণ ভূমণ্ডলের নানা অংশে চালান দিতেন। তাঁহার মতে তৎকালে এদেশে বহুসংখ্যক অর্থবান্ লোক ছিলেন, কিন্তু তাঁহাদের ক্ষমতা ও প্রভাব ঈর্ষ্যার চক্ষে লক্ষিত হইত না। মোগলরাজগণ দেশীয় বাণিজ্যের বিলক্ষণ উৎসাহদাতা ছিলেন; কিন্তু মীরজাফরের সময়ে এই অবস্থার সম্পূর্ণ বিপর্যয় ঘটে,—দেশীয় বণিকদিগকে উৎসাহ দেওয়া দূরে থাকুক, তাহাদের শোণিত শোষণ করা হইত। বণিকগণ তৎকালে মহাজনী কারবার করিতেন, এবং রাজা ও জমিদারেরা রাজসরকারের প্রাপ্য পরিশোধ করিবার নিমিত্ত তাহাদের নিকট ঋণ গ্রহণ করিতেন। রেজা খাঁ বলেন, তদ্দ্বারা বণিকদিগের ধন বৃদ্ধি হইত, এবং প্রজা ও কৃষকগণ কষ্টে পড়িলে বণিকগণ তাহাদের শ্রমোৎপন্ন দ্রব্যজাত উচিত মূল্যে কিনিয়া লইতেন। ইহাতে উভয় শ্রেণীর কাহারই স্বার্থহানি ঘটিতে পারিত না। রেজা খাঁ আরও বলেন যে, তৎকালে প্রবল দুর্ব্বলের উপর উৎপীড়ন করিলে ও তজ্জন্য অভিযোগ উপস্থিত হইলে, হাকিমগণ তৎক্ষণাৎ তদ্বিষয়ের অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইতেন এবং অপরাধীকে যথোচিত দণ্ড প্রদান করিতেন। মহম্মদ রেজা খাঁ দেশের ভূতপূর্ব্ব ও বর্ত্তমান অবস্থা, ইহার হীনতা প্রাপ্তির কারণ, ইহার পূর্ব্ববৎ উদ্ভূত অবস্থা পুনরাগমনের উপরে এই সমস্ত বিষয়ের যে বিবরণ লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন, তৎপাঠে এই সকল কথা সুন্দররূপে বুঝিতে পারা যায়। স্যর ফিলিপ ফ্র্যান্সিস ও অপর কয়েকজনের কর্মকাণ্ড তিনি এই বিবরণে লিখিয়া তাঁহাদের হস্তে অর্পণ করেন। সেগুলি এক্ষণে ভারতগবর্ণমেণ্টের হোম বিভাগের দলিলপত্রের মধ্যে আছে।