পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম অধ্যায়।
১৯৯

হইয়া থাকেন। বহু খাল ও রাস্তা নির্ম্মিত হইয়াছে, জল পরিস্কৃত হইয়াছে, এবং সমগ্র প্রদেশ প্রফুল্লোদ্যানের ন্যায় হাস্যময়ী মুর্তি ধারণ করিয়াছে। রেলওয়ে লাইন ও টেলিগ্রাফের তার দ্বারা কলিকাতা ভারতবর্ষের অন্যান্য সকল অংশের সহিত সংযোজিত হইয়াছে। এমন কি, শান্তিপ্রিয় হিন্দুও অধুনা অর্থকর বাণিজ্যের কুহকে বিমুগ্ধ। দেখা যায়, হিন্দুও বাণিজ্যে নিমজ্জিত হইয়া ইতস্ততঃ ছুটাছুটি করিয়া বেড়াইতেছে; বোধ হয় যেন, বর্তমান সময়ে ব্যবসায় ব্যতীত অন্য কোন বিষয়েরই চিন্তা তাহার মনোমধ্যে স্থান পায় না। ইহা নিঃসন্দেহ, এ বিষয়ে প্রতীচ্য জগৎ প্রাচ্য জগৎকে বিমোহিত করিয়াছে। নানা প্রকারের মিল (অর্থাৎ কলকারখানা), ডকইয়ার্ড (জাহাজ মেরামতের আড্ডা), গাট কষার হাউস ও কুঠিসকল সংস্থাপিত হওয়ায় অপেক্ষাকৃত নিম্নশ্রেণীর লোকদিগের অবস্থা কতকটা স্বচ্ছল হইয়া উঠিয়াছে। তাহাদের বেতন বৃদ্ধি পাইয়াছে। ফলতঃ আজিকালি গৃহস্থরৈ দাস, দাসী পাওয়া একবারে অসম্ভব হইয়া পড়িছে। সে যাহা হউক, নানাপ্রকার শ্রমশিক্ষা ও বাণিজ্যের প্রসার হওয়াতে বহু লোকের অবস্থা যে ভাল হইয়াছে, তাহা অস্বীকার করিবার উপায় নাই।

 বর্ত্তমান সময়কে বাণিজ্য-যুগ বলা যাইতে পারে। কৃষি-ব্যবসায়েও নানা প্রকার সংস্কার ও উন্নতি প্রবর্তিত হওয়ায় দরিদ্র কৃষিজীবিগণের প্রভূত উপকার হইয়াছে। কুশিদজীবী মহাজনদিগের হস্তে তাহাদের অযথা সর্বনাশ হইতেছিল; তাহাদিগকে সেই ঘোর বিপদ হইতে উদ্ধার করিবার নিমিত্ত নানা স্থানে ব্যাঙ্ক স্থাপিত হইয়াছে এবং প্রতীকারের অন্যান্য উপায় অবলম্বিত হইয়াছে। কলকারখানা দ্বারা দরিদ্র কৃষকগণের যে বহুবিধ উপ-