পাতশূন্য পূর্ণ ন্যায়বিচারের আশা করা বিড়ম্বনামাত্র। মানবগর্ব্বের ফল সম্বন্ধে রুসোর উক্তির মধ্যে এমন একটি সত্য নিহিত আছে, যাহা অস্বীকার করিবার উপায় নাই। তিনি বলেন, “সমাজের বিশৃঙ্খলাসমূহের মূল কারণ অনুসন্ধান করিলে আমরা দেখিতে পাই যে, মানুষ যে সমস্ত বিপৎপাত হইতে ক্লেশ পায়, সেগুলি ভ্রান্তি হইতে উদ্ভুত হয়,অজ্ঞতা হইতে আরও অধিক উদ্ভুত হয়—আর আমরা যাহা আদৌ জানি না, সেগুলি আমাদের যত ক্ষতি করে, তাহা অপেক্ষা আমরা যাহা জানি বলিয়া মনে করি, সেগুলি তদপেক্ষা অধিক ক্ষতি করে।
১৭শ ও ১৮শ খৃষ্টাব্দে মুসলমানেরা যে ভাবে বিচার বিতরণ করিতেন, তাহার নিন্দা করা কতকগুলি লেখকের রীতি হইয়া উঠিয়াছে। ঐ সময়ে ফ্রান্সে এবং ইউরোপের অন্যান্য অংশে দেওয়ানী ও ফৌজদারী উভয় প্রকার আইনই এরূপ কঠোর ছিল এবং তন্নিবন্ধন নীতিসমূহের মধ্যে কতকগুলি এরূপ অসঙ্গত ছিল যে, তত্তুলনায় মুসলমানদিগের আইনকানুনগুলিকে অনেক শ্রেষ্ঠ বলা যাইতে পারে।
নবাব মহম্মদ রেজা খাঁ বলেন যে, মুসলমান-শাসনকালে দুই প্রকার বিচারালয় ছিল; একটির নাম ছিল আদালত, অর্থাৎ আলিয়া বা নবাবের নিজস্ব বিচারালয়, এবং অপরটির নাম ছিল খলসা কাচারি। এই শেষোক্ত বিচারালয়ে ভূমির রাজস্ব, ঋণ ও অন্যান্য প্রকার মোকদ্দমার শুনানি ও মীমাংসা হইত। এই বিচারালয়ে যে রায় প্রকাশ করা হইত, তাহাতে হাকিমের অর্থাৎ বিচারকের স্বাক্ষর থাকিত। আদালতে অর্থাৎ নবাবের নিজ বিচারালয়ে খুন, ডাকাতি ও অন্যান্য গুরুতর অপরাধের ফৌজদারী মোকদ্দমাগুলির