পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩৬
কলিকাতার ইতিহাস।

উত্তরোত্তর সাতিশয় প্রভাবসম্পন্ন এবং কলিকাতা সমাজে বিশেষ গণ্যমান্য হইয়া উঠিতেছেন এই ব্যবসায় বিলক্ষণ অর্থকর বলিয়া যুবকদিগের দৃষ্টি স্বতই ইহার প্রতি আকৃষ্ট হইয়া থাকে, এবং একথা বলিলে বোধ করি কিছুই অত্যুক্তি হইবে না যে, দেশের মধ্যে যাঁহারা বিদ্যাবুদ্ধিতে শ্রেষ্ঠ, তাঁহারাই এই ব্যবসায়ে প্রবিষ্ট হইয়া ইহাকে অলঙ্কৃত করিয়াছেন। প্রথম অবস্থা হইতেই এই ব্যবসায়ে ব্যবহারাজীবগণ অগাধ অর্থ উপার্জ্জন করিয়াছেন। রমাপ্রসাদ রায়, কৃষ্ণকিশোর ঘোষ, প্রসন্নকুমার ঠাকুর, মোহিনীমোহন রায় প্রভৃতি অনেকেই স্ব স্ব উত্তরাধিকারীদিগকে বহুমুল্য সম্পত্তি দিয়া গিয়াছেন। সত্য কথা বলিতে কি, প্রভূত অর্থাগমের এই অভিনব পথ একমাত্র ইংরেজের আবিস্কৃত। আজিকালি উকিল মোক্তারের ছড়াছড়ি হওয়ায় এই ব্যবসায়ের আয় বহুজনের মধ্যে বিভক্ত ও বণ্টিত হইয়াছে বটে, কিন্তু তাহাতে উহার মোট পরিমাণ কিছু মাত্র কমে নাই, বরং উত্তরোত্তর বৃদ্ধিই পাইতেছে। মোকদ্দমার সংখ্যা দিন দিন অত্যন্ত বাড়িয়া উঠিতেছে, আর আইনের বিলম্বও অপরিহার্য্য হইয়া পড়িয়াছে। বিচারকগণ এই নিয়ত বর্দ্ধমান কার্য্য শেষ করিয়া তুলিতে পারিতেছেন না। উকিল ব্যতীত বহুসংখ্যক দেশীয় ও ইউরোপীয় ব্যারিষ্টার আছেন; তাঁহাদের আয়ের কথা শুনিলে সহসা বিশ্বাস করিতে প্রবৃত্তি হয় না। যে সুকল লেখক পূর্ব্বতন ব্যবহারজীবগণের আয় দেখিয়া অবাক হইয়াছিলেন, তাঁহাদের প্রেতাত্মা যদি এক্ষণে এই দেশের অবস্থা দেখিতে আসেন, তাহা হইলে তাঁহাদের অবস্থা কিরূপ হইবে, বলিতে পারা যায় না। বিচার অধুনা সহজে বা সামান্য ব্যয়ে পাইবার উপায় নাই। মোকদ্দমায় কিরূপে সর্বস্বান্ত হইতে