পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
কলিকাতার ইতিহাস।

গৃহ হইতে তাঁহারা দেশীয়দিগের পুরাঙ্গনার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া থাকেন। অনন্তর দেশীয়েরা মুর্শিদাবাদে যাইয়া অভিযোগ উপস্থিত করিলে নবাব হুকুম করিয়া পাঠাইলেন যে, ইংরেজদিগের কুঠিনির্ম্মাণ কার্য্য যেন সমাপ্ত করা না হয়। এই কথা শুনিয়া মজুরেরা কাজ করিতে অস্বীকার করিল। তখন চার্ণক সাহেব নদীর সেই পার্শ্বের যাবতীয় গৃহে অগ্নি সংযোগ করিয়া একখানি জাহাজে আরোহণ করিলেন। ফৌজদার (কলিকাতার নিকটস্থ) মুকুয়া থানার থানাদারকে সেই জাহাজ ধরিবার জন্য আদেশ করিয়া পাঠাইলেন। ইতিপূর্ব্বে আরাকানী ও মগ বোম্বেটেরা ভাগীরথী নদীতে যারপর নাই দৌরাত্ম্য ও লুণ্ঠনাদি করিত বলিয়া তাহাদের গতিরোধ করিবার নিমিত্ত একটী প্রকাণ্ড ও সুদৃঢ় লৌহশৃঙ্খল নির্ম্মিত হইয়াছিল। নদীর এপার হইতে ওপার পর্যন্ত সেই শৃঙ্খল বিস্তৃত করিয়া দিল, কিন্তু ইংরেজরা শৃঙ্খল ভগ্ন করিয়া চলিয়া গেলেন। ইংরেজদিগের জাহাজ একবার দুর্ভিক্ষের সময়ে আলমগিরের শিবিরে শস্য সরবরাহ করায় মোগল সম্রাট চার্ণকের প্রতি প্রসন্ন ও অনুকূল হইলেন এবং তাহাকে কলিকাতায় কুঠি নির্ম্মাণ করিতে অনুমতি প্রদান করিলেন।

 ১৬৯৮ খৃষ্টাব্দে ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি কেবলমাত্র ১৬ হাজার টাকা মূল্যে সূতানুটী, গোবিন্দপুর, ও কলিকাতা এই তিনখানি গ্রাম ও তৎসংলগ্ন ভূমি ক্রয় করেন। উক্ত ভূমি ভাগীরথীর পূর্ব্ব পারে নদীর ধার দিয়া দৈর্ঘ্যে প্রায় তিন মাইল এবং প্রস্থে প্রায় এক মাইল বিস্তৃত হইল। প্রোক্ত গ্রামত্রয় ঠিক কোন্ সময়ে কেবল “কলিকাতা” আখ্যায় আখ্যাত ও পরিচিত হইতে আরম্ভ করে, তাহা নির্ণয় করা সুকঠিন। কখনও উহা “পরগণা কলিকাতা” বলিয়া