পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৭৪
কলিকাতার ইতিহাস।

প্রায়ে যেন ভগবৎ-প্রণোদিত হইয়া কয়েক বৎসর অতি আগ্রহের সহিত বাইবেল এবং ইংরেজী ধর্ম্ম এত্ব ও দর্শনশাস্ত্রসম্পকীয় বহু গ্রন্থ অধ্যয়ন করেন। তিনি প্রথমে কিছু দিন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকু- রের প্রতিষ্ঠিত আদি ব্রাহ্মসমাজে যোগদান করুন; কিন্তু কেশবের স্বাধীনতাপ্রিয় ক্ষমতাশালী হৃদয়কে বশীভূত করা দেবেন্দ্রনাথের পক্ষে অসাধ্য হইয়া উঠিল। কেশবচন্দ্র দেবেন্দ্রনাথ হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া একটি স্বতন্ত্র সমাজ স্থাপন করিলেন এবং অল্পকাল মধ্যে নিজ মহৎ চরিত্র ও গুণের অনুরূপ পদ লাভ করিলেন। আমরা তাহার জীবনের কার্য্যাবলীর সূক্ষ্ম বর্ণনায় প্রবৃত্ত হইতে ইচ্ছা করি না। তাহার শিষ্য ও সহযোগী সুযোগ্য শ্রীযুক্ত প্রতাপচন্দ্র মজুম- দার মহাশয় তাঁহার যে জীবনচরিত প্রণয়ন পরিয়াছেন, তাহা হইতে তাহার জীবনের অনেক কথাই জানিতে পারা যায়। ভারত- রাজরাজেশ্বরী স্বর্গীয়া ভিক্টোরিয়া ভারতবাসীদিগের মধ্যে একমাত্র কেশবচন্দ্রের সহিত আলাপ পরিচয় করিয়া আনন্দলাভ করিয়া ছিলেন। কেশব ও তাঁহার পরিজনবর্গ এবং ইংল্যাণ্ডের রাজ- পরিবারবর্গের মধ্যে সর্বদাই চিঠিপত্রের আদান প্রদান চলিত। রামমোহন রায় এই নবধর্ম্মের প্রতিষ্ঠাতা বটে, কিন্তু কেশবই ইহার সর্বশ্রেষ্ঠ প্রচারক। তাঁহারই যত্নচেষ্টায় ব্রাহ্মসমাজ এতাদৃশ শ্রদ্ধেয় হইয়াছে। ১৮৮৬ খৃষ্টাব্দে কেশবচন্দ্র কালগ্রাসে পতিত হন।

 মিশনারিরা যে এ দেশের অনেক উপকার করিয়াছেন, তাহা ইতঃপূর্বে উল্লিখিত হইয়াছে। শ্রীরামপুরের মিশনারিরাই বাঙ্গালা সংবাদপত্রের উন্নতির পথপ্রদর্শক। প্রথম বাঙ্গালা সংবাদপত্র “সমাচার-দর্পণ” তাহাদেরই এরা ১৮১৮ অব্দে প্রকাশিত হয়। কেবল তাহাই নহে, বাঙ্গালা ভাষায় ছাপিষার অক্ষর এবং মুদ্রাযন্ত্রও