পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবম অধ্যায়।
২৯৫

এবং অধ্যয়ন সমাপ্ত করার পর কিছুদিন মাদ্রাজে যাইয়া অবস্থিতি করেন। অনন্তর তিনি বাঙ্গালায় প্রত্যাগমন করিয়া তিনখানি নাটক, দুইখানি প্রহসন, এবং বাঙ্গালস ও অমিত্রাক্ষর ছন্দে তিনখানি ও মিত্রাক্ষরচ্ছলে একখানি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন। ইতঃপূর্ব্বে অমিত্রাক্ষর ছন্দে বাঙ্গালা কবিতা আর কেহ রচনা করেন নাই। অতঃপর তিনি ইংল্যাণ্ডে গমন করেন এবং প্রাতঃস্মরণীয় উদারচরিত দাতা পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সাহায্যে ব্যারিষ্টার হইয়া স্বদেশে প্রত্যাবৃত্ত হন। ১৮৭৫ অব্দে মধুসূনের মৃত্যু হয়। বস্তুয় তাঁহার গ্রন্থাবলী পাঠ করিলে, সেগুলি বৃষ্টিয়ানের রচিত, বিশ্বাস করিতে কোন মতেই প্রবৃত্তি হয় না।

 শ্রীযুক্ত রমেশচন্দ্র দলের মতে মধুসূদনের নিয়েই সুপ্রসিদ্ধ কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসন। তাঁহার কবিতা উচ্চশ্রেণীর মধুর কল্পনা, সৌন্দর্য্যের অতি উৎকৃষ্ট ভাব, বিশুদ্ধ চিন্তা ও ভাবগাম্ভীর্য্যে পরিপূর্ণ। তাহার ছোট ছোট কবিতাগুলিতেও উন্নত ও গভীর ভাব প্রকটিত। হেমচন্দ্র অনেকগুলি পদ্যগ্রন্থ লিখিয়া রাখিয়া গিয়াছেন। তিনি কলিকাতা হাইকোটের সবকারী উকিল ছিলেন। ১৮০৮ অব্দে তাঁহার জন্ম এবং ১৯০২ অব্দে তাহার মৃত্যু হয়। শী শ্রীযুক্ত নবীনচন্দ্র সেনের কবিতাতেও উচ্চশ্রেণীর কল্পনা ও ভাবমাধ্যুর্য্য প্রকটিত। উহার সৌন্দর্য্য যেন নিত্য নতুন। বাঙ্গালা কবিতা রচনায় আরও অনেকে প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছেন, তন্মধ্যে ৺মদনমোহন তর্কালঙ্কার ৺রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও যুক্ত মনোমোহন বসু, এবং নারী কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী, কামিনী সেন, মানকুমারী প্রভৃতির নাম সবিশেষ উল্লেখযোগ্য।