পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবম অধ্যায়।
২৯৭

সুপরিস্ফুট। শ্রীযুক্ত রমেশচন্দ্র দত্ত সাহিত্য-ক্ষেত্রে যে অসামান্য শ্রম স্বীকার করিয়াছেন, তজ্জন্য তিনি তাঁহার স্বদেশীয়গণের অশেষ কৃতজ্ঞতার ভাজন, সন্দেহ নাই। তাঁহার মহনীয় উপন্যাসগুলি বঙ্গবাসীদিগের পরম সময়ের সামগ্রী। তিনি ঋগবেদের সটীক সংস্করণ প্রকাশ করিয়াছেন, তাহা ইউরোপের বিদ্বৎসমাজে সমুচিত প্রশংসালাভ করিয়াছে। তাঁহার ঐতিহাসিক গ্রন্থনিচয় তাঁহাকে সুলেখক বলিয়া ঘোষণা করিতেছে। ফলতঃ তিনি একা ধারে ঐতিহাসিক, ঔপন্যাসিক কবি, পণ্ডিত ও সুলেখক।

৺সার রাজা রাধাকান্ত দেব বাহাদুর হিন্দু কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ৩৪ বৎসরকাল উক্ত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ছিলেন। সেকালে হিন্দু সমাজ ইংরেজী শিক্ষাকে ঈর্ষা ও আশঙ্কার চক্ষে দেখিত, কিন্তু উক্ত বাজা বাহাদুর উহার পক্ষাবলম্বন করেন এবং কলেজটাকে সুফলপ্রসু করিয়া তুলেন। তিনি গভর্ণমেণ্ট-সংস্কৃত কলেজের নিয়মিত পরিদর্শক ও কিছুকাল উহার অবৈতনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি অনেক সময়ে উহার বার্ষিক পরীক্ষাও গ্রহণ করিতেন। তিনি উদারনীতির পক্ষাবলম্বী ছিলেন ও স্ত্রীশিক্ষার মূল্য বুঝিতেন। মাননীয় বেথুন সাহেব বলিয়াছেন,—“আধুনিক কালে ভারতবাসীদিগের মধ্যে তিনিই প্রথমে স্বদেশীদিগকে বুঝাইয়া দেন যে, স্ত্রীলোকদিগকে অজ্ঞানান্ধকারে আচ্ছন্ন রাখা নিতান্তনির্ব্বুদ্ধিতা ও দোষের কার্য্য।” বিভিন্ন বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা পারিতোষিকগ্রহণার্থ তাঁহার ভবনে সমবেত হইত। তিনি স্ত্রী-শিক্ষা সম্বন্ধে কয়েকখানি পুস্তিকা প্রচার করিয়াছিলেন, এবং ঐ সকল পুস্তিকায় যেরূপ উপদেশ দিয়াছিলেন, নিজেও যে কার্যতঃ তদনুরূপ অনুষ্ঠান করিতেন,