পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অধ্যায়।
২৭

পরিবর্ত্তনে এই দারুণ দুর্ব্বৎসরই আবার সাতিশয় সৌভাগ্যসূচক হইয়াছিল। জনৈক প্রাচীন ঐতিহাসিক এই বৎসরের উল্লেখ করিয়া বলিয়াছেন;—‘এই সময়ে আমাদের বণিকগণ সাতিশয় ধনাঢ্য হইয়াছিলেন,—এই সময়ে সুবর্ণ অপর্য্যাপ্ত ছিল, সামান্য পারিশ্রমিক প্রদানে শ্রমজীবী পাওয়া যাইত, এবং সমস্ত কলিকাতায় একজনও নিঃস্ব ইউরোপীয় ছিল না।’

 ১৭৪২ অব্দে বা তৎসমকালে একটা জনরব প্রচার হইয়া পড়িল যে, মার্হাট্টা দস্যুরা শীঘ্রই কলিকাতা লুণ্ঠন করিতে আসিবে। এই জনরবে কলিকাতার সর্ব্বশ্রেণীর লোকেই দারুণ ভয়ে ও আতঙ্কে বিহ্বল হইয়া পড়িল। এই সময়ে স্থির হইল যে, ইংরেজ উপনিবেশটিকে রক্ষা করিবার জন্য উহার চতুর্দ্দিকে একটী পরিখা খনন করা হইবে। ইহাও স্থির হইল যে, ঐ পরিখা সূতানুটীর উত্তরাংশ হইতে গোবিন্দপুরের দক্ষিণভাগ পর্য্যন্ত খনন করা হইবে। যে স্থান দিয়া এক্ষণে সার্কুলার রোড বিস্তৃত, ঠিক সেই স্থান দিয়া ঐ পরিবাটী বিস্তৃত ছিল। মার্হাট্টাদিগের উৎপাত নিবারণোদ্দেশ্যে উহা খাত হইয়াছিল বলিয়া লোকে উহাকে মার্হাট্টা-খাত বলে। ছয় মাসে দৈর্ঘ্যে তিন মাইল মাত্র খাত হইলে ঐ কার্য্য পরিত্যাগ করা হইল। উহার খননকার্য্য সমাপ্ত হইলে উহা অর্ধবৃত্তাকারে সাত মাইল বিস্তৃত হইল। কথিত আছে যে, এই কার্য্যে ৬০০ পেয়াদা ও ৩০০ ইউরোপীয় নিযুক্ত হইয়াছিল। খাত হইতে যে মৃত্তিকা উত্তোলিত হইল, তদ্দ্বারা নগরের দিকে একটি রাস্তা নির্ম্মিত হইল। অতঃপর কলিকাতার ইতিহাস সম্পর্কে যে সকল ঘটনা ঘটে, তন্মধ্যে দুশ্চরিত্র নবাব সিরাজুদ্দৌলা কর্ত্তৃক ১৭৫৬ খৃষ্টাব্দে নগরলুণ্ঠনই সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই সময়ে যে একটি অতি