হইয়াছে। বোধ হয়, ওলন্দাজেরাই ইংরেজদের হৃদয়ে উদ্যানের প্রতি অনুরাগ সঞ্চার করিয়া দিয়াছে। চুঁচুড়াতে তাহাদের নিজেদেরই একটি উদ্যান ছিল; উহা উপর্য্যুপরি নির্ম্মিত তিনটী প্রস্তরবেদিকার উপর প্রস্তুত হইয়া ছিল এবং উহার পশ্চাদ্ভাগে বৃক্ষকুঞ্জসমূহ দণ্ডায়মান ছিল। জিরেটে ফরাসীদেরও একটি অতি সুন্দর বাগান ছিল। ১৮৮০ অব্দে হিকির গেজেটে নানাস্থানের কতকগুলি বাগান-বাড়ীর বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়, যথা—বৈঠকখানায়, বালিগঞ্জে, টালায়, কমোডোর রিচার্ডসনের বাগানবাড়ী, রসাপাগলার ডন্ক্যান্ সোর নামক স্থানে অতি মনোহরভাবে অবস্থিত। জন্ রেলের বাগানবাড়ী, চৌরঙ্গিতে সিপাহী বারিকের পূর্ব্বদিকে ও লবণ-জলের হ্রদে যাইবার প্রধান রাস্তা হইতে ৪০০ গজ দূরে অবস্থিত; আলিপুরের নিকট কুলপি রোডের উপর অবস্থিত একটি হল, তিনটি কুঠারি ও দুইটী বারান্দাবিশিষ্ট একটী বাগানবাড়ী। ক্রফ্ট সাহেব গভর্ণর জেনারেল (ওয়ারেন্ হেষ্টিংস্) ও তৎপত্নী এবং আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ ভদ্রলোককে নিজের শুকসাষরস্থ বাগানে নিমন্ত্রণ করিয়া খাওয়াইয়াছিলেন; উহা এক্ষণে নদীগর্ভে নিমজ্জিত।
সেকালে সাহেবদিগের মধ্যে পদভেদে মর্যদাভেদের অত্যন্ত প্রাবল্য ছিল। কথিত আছে যে, উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদিগের মধ্যে লর্ড উইলিয়াম বেণ্টিঙ্কই প্রথম এই অবস্থায় বিপর্যয় ঘটান। গভর্ণমেণ্ট হাউসে তিনি যে সমস্ত লেভি (দরবার) করিতেন, তাহাতে সমাজের সকলকেই নিমন্ত্রণ করিতেন; ইহাতে সিভিলিয়ান্ ও কৌলীন্যাভিমানী অন্যান্য সাহেবেরা নিরতিশয় অসন্তুষ্ট হইতেন মিসেস্ কিণ্ডার্স্লি নিজ ভ্রমণবৃত্তান্তে (১৭৬০-১৭৬৮)