পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২৮
কলিকাতার ইতিহাস

লিখিয়াছেন-“ভারতীয় ইংরেজ পরস্পরের সাহায্যার্থ যেমন অকাতরে অর্থ ব্যয় করেন, ভূমণ্ডলের আর কোন অংশেই লোকে তদ্রুপ করে না।” বস্তুতঃ এ কথাটী অদ্যাপি বিশষ্টরূপে সত্য। অত বড় সুপণ্ডিত যে অধ্যাপক ম্যাক্সমুলার, তিনিও ভারতীয় ইংরেজদিগের স্বজাতি-প্রেমে বিস্ময়বিমূঢ় হইয়াছিলেন।

 তদানীন্তন ভারতীয় ইংরেজদিগের আতিথেয়তার কথা বহু পর্যটক বিস্ময় ও কৃতজ্ঞতা-সহকারে খ্যাপন করিয়াছেন। কথিত আছে যে, য়াঁহার বাটিতে আতিথ্য গ্রহণ করা যায়, তাঁহার অর্থ ও ভৃত্যবর্গ অতিথির ইচ্ছাধীন। এ সম্বন্ধে এক ব্যক্তি পশ্চাল্লিখিতরূপ কৌতুকাবহ বিবরণ লিপিবদ্ধ করিয়াছেন;—প্রাতরাশটীই এক মাত্র সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাধীন আহার, স্ব স্ব রুচি অনুসারে যাহার যাহা ভাল লাগে, সে তাহারই হুকুম করে, পক্ষান্তরে মাধ্যাহ্নিক আহার, চা ও নৈশ আহার যেন এক এক প্রকার রাজকীয় লেভি। ১২টার সময় একটা আহারের ব্যবস্থা হয়; তাহাতে পর্ষ্যুষিত শূকরমাংস, কুক্কুটশাবক, এবং একপ্রকার শীতল সুরামিশ্রিত সরবৎ থাকে! ১টার সময় লঘু নৈশ আহারের ব্যবস্থা, তৎসহ দুই এক গেলাস অনুগ্র সুরা, রুটি পিষ্টকাদির ছিলকা ও পনীর; তৎপরে ১১টার সময় হুঁকা ও শয্যা। লর্ড কর্নওয়ালিস্ ১৮৮৯ খৃষ্টাব্দের প্রথম দিবসে কতকগুলি লোককে ওল্ড কোর্ট হাউসে বেলা ৩॥৹ টার সময় মাধ্যাহ্নিক আহারে নিমন্ত্রণ করেন। কূর্ম্ম ও পেরু নিমন্ত্রিতদিগের রসনা জলসিক্ত করিয়া তুলিয়াছিল। রাত্রি ৯॥৹ টার সময় একটি ‘বল্’ নাচের ব্যবস্থা হইয়াছিল। রাত্রি ১২টায় নৈশ আহারের ব্যবস্থা হয় এবং প্রত্যুষে ৪টার সময় মজলিস ভাঙ্গিয়া যায়।