নৃত্যগীতের প্রাচুর্য ছিল; আমি গর্ব্বিত ও উন্নতশীর্ষ ছিলাম, কিন্তু অধুনা ধূলিসাৎ হইয়াছি।”
ডাক্তার বুকানন হামিল্টন বলেন, “সম্রাট শাহজহাঁর অন্যতম পুত্র শাহসুজা ১৬৩৯ খৃষ্টাব্দে গৌড় পরিত্যাগ করিয়া রাজমহল নগর বঙ্গের রাজধানী বলিয়া নির্ধারণ করেন। উক্ত লেখকের মতে তদবধি গৌড়ের ধ্বংসের সূত্রপাত হয়। তাহার বিবেচনায় সেই সময়ে নগরটা অবিলম্বে ধ্বংসমুখে পতিত হইল,কোনও প্রকার বিপুল বা অসামান্য বিপৎপাত জন্য সে সেরূপ হইল তাহা নহে, পরন্তু রাজধানীর স্থানান্তরীকরণই তাহার একমাত্র কারণ।”
রাজমহল আর একটি দৃষ্টান্ত। টুইনিঙ সাহেব লিখিয়াছেন —“হুগলী ও নবদ্বীপের ন্যায় রাজমহলও ভারতবর্ষের রাজনগরসমুহের অসামান্য অস্থায়িত্বের একটি সমুজ্জ্বল নিদর্শন; অথবা এ কথাও বলা যাইতে পারে যে, এতগুলি নগর বা গ্রামের রাজধানী, পদে উন্নতি ও পরে পুনরায় তাহাদের পুর্ব্ব নিকৃষ্ট বা নগণ্য অবস্থায় অবনতি;—যে অবস্থায় তাহাদের মনোহরপুষ্পোদ্যান ও ফলবৃক্ষসমুহ সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয় এবং তাহাদের অত্যভুত ঐশ্বর্যাড়ম্বর কেবল তাহাদের ধ্বংসাবশেষের পরিমাণ দেখিয়াই নির্ণয় করিতে হয়, এতদুভয়ের মধ্যে যে বহুসংখ্যক বৎসর অবশ্যই অতীত হইয়া থাকিবে, রাজমহল তাহারই অন্যতম প্রকৃষ্ট প্রমাণ ......।” অন্যত্র তিনি বলিয়াছেন —“রাজমহল যে এক সময়ে একটি বিশাল নগর ছিল, বঙ্গের রাজধানী ছিল, তাহাতে অণুমাত্র সন্দেহ নাই; কিন্তু কতদিন উহার গৌরব-রবি সমুজ্জ্বল ছিল, তাহ। এই সুদূরবর্ত্তী কালরূপ তিমিরে সমাচ্ছন্ন। যে স্থলে কোনও জাতির ইতিহাস বিজেতার তরবারির অনুসরণ করে, অথবা তাহা বশ্যতারূপ শৃঙ্খলে