পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় অধ্যায়।
৪৫

ঢাকা পুর্ববঙ্গের রাজধানী এবং সমস্ত বাঙ্গালার মধ্যে পঞ্চম বৃহত্তম নগর বলিয়া বিবেচিত হইয়া থাকে। নদীয়া পাঁচ শতাব্দীকাল “বঙ্গের অক্সফোর্ড” (অর্থাৎ বিদ্যালোচনার প্রধান স্থান ছিল।) টি টুইনিঙ, সাহেব স্বপ্রণীত ভারতভ্রমণবিষয়ক গ্রন্থে লিখিয়াছেন:—"......সম্রাট আকবর খৃষ্টীয় ঘোড়শ শতাব্দীতে রাজত্ব করিয়াছিলেন; তাহার ৪,০০০ বৎসর পূর্ব্ব হইতে অতি প্রাচীন ও সুপ্রসিদ্ধ নগর নদীয়া বাঙ্গালার রাজধানী ছিল। ......সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে ইউরোপীয়েরা অন্যান্য কয়েকটা স্থানের ন্যায় নদীয়াতেও তামাক গাছ প্রথম আমদানী করেন।”

 এই স্থানে সুপ্রসিদ্ধ বৈষ্ণবধর্মপ্রচারক চৈতন্য জন্মগ্রহণ ও ধর্ম্মপ্রচার করেন। বৈষ্ণবদিগের নিকট এই স্থান সাতিশয় পবিত্র।

 মুকসদাবাদ বা মুর্শিদাবাদ মুর্শিদকুলিখাঁর বাসস্থান ছিল। তিনি এই স্থানে রাজধানী উঠাইয়া আনেন এবং ১৭০৪ খৃষ্টাব্দে নিজের নামানুসারে নগরের নামকরণ করেন। তাহার উত্তরাধিকারীদিগের অধীনেও ১৭৭২ অব্দ পর্যন্ত ইহা রাজধানী ছিল। উক্ত বৎসর ভারতবর্ষের প্রথম গবর্নর জেনারেল ওয়ারেণ হেষ্টিংস কলিকাতাকেই রাজকার্যপরিচালনের প্রধান স্থান করেন। কলিকাতার অতি সুন্দর মসজিদ, প্রাসাদ ও সরকারী স্মৃতিমন্দিরসমূহের মধ্যে অনেক গুলি গৌড়ের ধ্বংসাবশেষ হইতে উত্তোলিত ইষ্টক ও প্রস্তর দ্বারা নির্মিত হইয়াছিল। বস্তুতঃ পাণ্ডুয়া, রাজমহল ও টাণ্ডার সরকারী অট্টালিকাসমূহের অধিকাংশই ধ্বংসপ্রাপ্ত গৌড়নগরের লুষ্ঠিত উপাদানসমূহে বিরচিত হইয়াছিল। কথিত আছে যে, মুর্শিদাবাদের গোরাবাজারস্থিত প্রধান বণিজাধ্যক্ষের আবাসবাটী গৌড়ের ইষ্টক