পাতা:কলিকাতা কল্পলতা - রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কলিকাতা কল্পলতা

পর্তুগীজদিগের অত্যাচারে অনুশোচনা হওয়ায় বালেশ্বরের নিকট পিপলি নামক স্থানে বাণিজ্যকুটি নির্মাণ করিতে আদেশ বিধান করিলেন। তদনুসারে ইং ১৬৩৪ অব্দে তথায় প্রথম বাণিজ্যালয় সংস্থাপন হইল। তদনন্তর ইং ১৬৩৯ অব্দে শাহাজাহান পাদশাহের দ্বিতীয় পুত্র সুলতান সুজা বাংলাদেশের নবাবী পদে অভিষিক্ত হইয়া রাজধানী রাজমহলে আসিলে পর বোটন সাহেব স্বজাতীয় পক্ষ হইতে যথাবিহিত সম্মান প্রদর্শনকরণার্থউক্ত স্থানে যান। দৈবাধীন অন্তঃপুরচারিণী কোন রাজমহিলার সাংঘাতিক পীড়া হইলে বোটন সাহেবের চিকিৎসানৈপুণ্য সুবিখ্যাত হইয়া উঠায় নবাব উক্ত রোগ প্রতিকারার্থ তাহাকেই বরণ করিলেন।তাহাতে বোটন সাহেব স্বীয় বিদ্যাবলে ভূপতি ভামিনীকেনিরাময় করাতে সুলতান সুজাতাহার প্রতি যথেষ্ট সন্তুষ্ট হইয়া বালেশ্বর এবং হুগলী নগরেইংরাজদিগকে বাণিজ্যালয় স্থাপনে অনুমতি দান করেন।

তারপর নবাব সায়েস্তা খাঁর অধিকারকালে ইং ১৬৬৮ অব্দে ইংরাজরা ভাগীরথীবাহিয়াঙ্গলীনগরীর নিকটজাহাজলইয়া যাইতে আজাপ্রাপ্তহন।ইতিপূর্ব্বেতাহারা সুলুপ যোগে দ্রব্যাদি লইয়া বাহির সমুদ্রে জাহাজ বোঝাই করিতেন। অপর প্রত্যেক নূতন নবাবের শাসনারম্ভেই তাহাদিগকে নূতন ফাৰ্মাণ অর্থাৎ বাণিজ্যকরণের অনুমতিপত্র গ্রহণ করিতে হইত—তাহা অত্যন্ত ব্যয়সাধ্য ছিল। কিন্তু নবাব সায়েস্তা খাঁর অনুগ্রহে সেদায় হইতেও তাহারা মুক্ত হন। এই নবাব দিল্লীতে প্রস্থান করিলে তৎসমভিব্যাহারে ইংরাজদিগের বাণিজ্যকুটির বড় সাহেব গমনকরতঃ এক ফার্ম্মাণে নিরন্তর বাণিজ্যকরণের অনুমতি প্রার্থনা করেন। যদিও বিস্তর ব্যয় ও কষ্টস্বীকারপূর্ব্বক তাহা লব্ধ হউক কিন্তু তাহা পাইয়া ইংরাজেরা এরূপআহ্লাদিতহইয়াছিলেন যে,তাহারা এইউপলক্ষে তিনশতবার তোপধ্বনি করিয়াছিলেন। ১৮

১৮