পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৭১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলিকাতা সেকালের ও একালের س۹bرN মৃত্যুসংবাদ তখনই পরামাণিকের বা সহরের মধ্যে উড়িয়া-সদরের নিকট পাঠাইতে হইবে। এরূপ স্থলে পরামাণিক, সেই মৃত-ব্যক্তির অস্ত্যেষ্টি-ক্রিয়া ও শ্রাদ্ধাদি জন্য যে টাকা প্রয়োজন, তাহা মুত-ব্যক্তির সম্পত্তি হইতে দেওয়াইবেন। বাকী —যাহ থাকিবে, তাহা তাহার উত্তরাধিকারীকে দেওয়া হইবে। যদি কোন উত্তরাধিকারী না থাকে— তাহা হইলে শ্রাদ্ধাদির ব্যয়ের জন্য কিছু দিয়া, বাকী যাহা তাহ পরামাণিকই লইবে । ( ১২ ) যদি কোন উড়িয়া-বেহীরা মরিয়া যায়, আর উক্ত মৃত ব্যক্তির কলিকাতায় কেহ না থাকে, তাহা হইলে পরামাণিক তাহার পরিত্যক্ত সম্পত্তি, ছয় মাসকাল রাখিয়া দিবেন। ইতিমধ্যে দেশ হইতে যদি কোন উত্তরাধিকারী আসিয়া পড়ে, তাহা হইলে সেই ব্যক্তিই মৃতের সমস্ত সম্পত্তি লইবে । কিন্তু এরূপ উত্তরাধিকারীর অবর্তমানে— পরামাণিক, মৃত-ব্যক্তির সম্পত্তি কোন দাতব্য-কার্য্যে ব্যয় করিবেন। ( ১৩ ) উড়িয়া-ব্রাহ্মণ ও যাদুকর-বৃত্তি (?) অবলম্বনকারী উড়িষ্যাবাসিগণ পরামাণিককে সাধ্যমত কিছু দিবে। একজন উড়িয়া পরামাণিক, তৎকালীন বোর্ড-অব-রেভেনিউর, সেক্রেটারি সাহেবের নিকট, তাহার প্রাপ্য বাব সম্বন্ধে, উল্লিখিত একটী তালিকা দাখিল করে। এইরূপ প্রথা কয়েক বৎসর ধরিয়া চলিয়া আসিতেছিল। গবর্ণর-জেনারেল সাহেবের চক্ষে, এই সকল বাব-আদায় প্রথা নীতিবিগর্হিত বলিয়া বিবেচিত হওয়ায়, তিনি ১৭৯০ খৃঃ অব্দের ৫ই আগষ্ট্রের ঘোষণাপত্র দ্বারা এই উপরি আদায়ের পথ বন্ধ করিয়া দেন । এই “পরামাণিকই” সেকালের কলিকাতার অধিবাসী উড়িয়াগণের নেতা ছিল। এই ঘটনা হইতে জানা যাইতেছে—উড়িয়াগণ কোম্পানীর মধ্যের আমল হইতেই শতাধিক বৎসর পূৰ্ব্বে কলিকাতার ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকরীর জন্য আসিয়া জুটিয়াছে। -- উড়িয়া বেহরোরা সেকালে অনেক বড় মানুষের বাড়ী চাকরি করিত। মহারাজা নবকৃষ্ণ বাহাদুরের অনেক উড়িয়া চাকর ছিল। তখনকার দিনে গাড়ী ঘোড়ার প্রচলন বেশী ছিল না। পান্ধীই তখনকার সাধারণের ব্যবহার্য্য যান ছিল । ভাড়াটিয়া পান্ধী ছাড়া, অনেক বাঙ্গালী ও সাহেব বড়লোক, ঘরের পান্ধীতে চড়িতেন। উড়িয়ারাই এই সব পাল্কী-বহন করিত।