পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৭৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

에 কলিকাতা সেকালের ও একালের । খাট দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা-মোকদম হুইত, তাহারও বিচার করিয়া, দণ্ডাজ্ঞা দিতেন। সামান্য অপরাধের দণ্ডবিধানে তাহার সরাসর ক্ষমতা ছিল। কিন্তু যখন কোন আসামীর চরম বা প্রাণদণ্ডের আদেশ হইত, সেই সময়ে তাহাকে প্রেসিডেন্ট সাহেবের মত লইতে হইত। তবে সাধারণ দণ্ড অর্থাৎ বেত্ৰাঘাত, চাবুকমারা, কয়েদ করা প্রভৃতি ব্যাপারে, তিনি সৰ্ব্বৈব ক্ষমতাপন্ন ছিলেন। একাধারে তিনি জজ, ম্যাজিষ্ট্রেট ও কালেক্টারের কাজ করিতেন। এই সাহেব-জমীদারের একজন এদেশীয় সহকারী বা ডেপুটী ছিলেন, একথা আমরা অাগে বলিয়াছি । ইনিই “ব্লাক-জমীদার” । ইহঁারও ফৌজদারী-বিভাগে শাসনকর্তৃত্ব চলিত—দস্তুরমত কোট-কাছারী বসিত। ব্ল্যাক-জমীদার গোবিন্দরাম মিত্ৰ—বড়ই দোর্দগু-প্রতাপ ছিলেন। তিনি তাহার উপরওয়ালাদের বড় একটা ভয় করিতেন না । তাহার প্রচণ্ড-শাসনে চৌরঙ্গীর জঙ্গলে ও কলিকাতার নির্জনতর স্থান সমূহের ডাকাতগণ বড়ই জব্দ হইয়াছিল। তাহার নামে তাহারা ভয়ে জড়সড় হইত। এরূপ জনপ্রবাদ, যে একবার তাহারা লোক চিনিতে ন পারিয়—খোদ মিত্ৰজার পান্ধী ঘেরাও করে। শেষে তাহারা যখন শুনিল—যে সে পাষ্ট্ৰী মিত্ৰজার, তখন “এ যে ডাকাতের বাবার পান্ধী ছেড়ে দে” বলিয়া সরিয়া পড়ে। এটা গল্পই হউক, আর জনপ্রবাদই হউক, সেকালের ইংরাজী অনভিজ্ঞ বাঙ্গলী, যে খুব জবরদস্ত হাকিম হইতে s পারিত, তাহার প্রমাণ বটে। প্রথমে ইষ্ট-ইণ্ডিয়া-কোম্পানী এদেশে ব্যবসা করিতেই আসিয়াছিলেন। তাহারা জানিতেন না—এই বাণিজ্য ব্যাপার হইতেই তাহীদের রাজলক্ষ্মী লাভ হইবে। সেকালের প্রতাপশালী বাদসহ আর প্রাদেশিক নবাব ও ফৌজদারের হাতে তাহার এই বাণিজ্যের স্বৰাদি লাভ, বাণিজ্য ছাড়, কুঠী-নিৰ্ম্মাণ প্রভৃতি ব্যাপারে অনেক নিগ্রহ ভোগ ক্লরিয়াছিলেন। এই নিগ্রহকারীদের মধ্যে সর্বপ্রধান হইতেছেন, বাঙ্গালার মোগল-ভাইসরয় নবাব-উল-মুলুক সায়েন্ত খ বাহাদুর। তার পর নবাব মুরশীদকুলী খাঁ দেওয়ান এবং সুবেদারের যুক্তপদ লাভ করিয়া, ইংরাজ-বণিকদের বড় কম উৎপীড়ন করেন নাই। ইতিহাস-তত্ত্বজ্ঞ সুপণ্ডিত উইলসন সাহেবের যত্নে ও চেষ্টায়, আজ তাহা শিক্ষিত পাঠক সমাজে অপরিচিত নহে । ভারতের নানাস্থানে কোম্পানীর কুঠী ছিল। মাজাজ, বোম্বাই,