যোগতত্ত্ব । (t হয়। যাহা হউক, যোগ কাহাকে বলে, এবং ইহা অভ্যাস করিলে মনুষ্য জাতির কোন উপকার হইতে পারে কি না, উপস্থিত প্রবন্ধে তাহাই বিবেচিত হইতেছে। ঋষিগণপ্রযুক্ত যোগ শম্বের প্রকৃত মৰ্ম্ম কি ? ইহার ব্যাখ্যা বিষয়ে সক লের এক মত নয়। কেহ কেহ কহেন বিষয়-ব্যাপার-বিহীন নিলিপ্ত পরমাস্বার সহিত জীবাত্মার মেলন যোগশক্মবাচ্য ; অপরের এই মত যে শারীরিক স্থৈৰ্য্য দ্বারা চিত্তের একাগ্রতা সাধনই যথার্থ যোগ। নিম্নলিখিত যোগের বিবরণ পাঠ করিলে এই শেষ ব্যাখ্যা যে সকলেরই স্বসঙ্গত বোধ হইবে তাহাতে সন্দেহ নাই । - যোগিগণের মতে যোগ পরম বিদ্যা । যিনি ইহার চরম সোপানে অধিরূঢ় হইতে পারেন, তাহার অসাধ্য আর কিছুই থাকে না । তাহারা কহেন, সমাধিসিদ্ধ পরম যোগী অনায়াসে এক দেহ হইতে দেহান্তরে প্রবেশ করিতে পারেন ; মৃত্যু তাহার ইচ্ছাধীন। মৃত্তিকায় প্রোধিত করিলে, জলমধ্যে নিমগ্ন রাখিলে সহসা যোগীর প্রাণবিয়োগ হয় না । অধিক কি, ইচ্ছা করিলে একজন সিদ্ধপুরুষ অনায়াসে অভিনব অদ্ভুত ব্যাপার সমস্ত দেখাইতে পারেন। এই সকল অলৌকিক কাজ সম্পন্ন করা কতদূর মনুষ্যের ক্ষমতাসাধ্য। তাহা আমরা বলিতে পারি না, কিন্তু তাহার মধ্যে যেগুলি যুক্তিসঙ্গত ও কাৰ্য্যে পরিণত হইতে পারে, তাহারই সবিশেষ সমালোচনা করা কৰ্ত্তব্য । - যোগাভ্যাসের ফল স্বরূপ যে কয়েকটী বিষয় উপরে লিখিত হইয়াছে, তাহার মধ্যে আয়ুবুদ্ধি, ইচ্ছামৃত্যু এবং শ্বাসরোধেও জীবন রক্ষা হয়, এইগুলি যুক্তি ও বিবেচনাসঙ্গত এবং প্রত্যক্ষ ঘটনা। নৈসর্গিক নিয়ম দ্বারাও-এগুলি বিশিষ্টৰূপ সপ্রমাণ হয়। স্বভাবে যাহা নাই, তাহ আর কোথাও নাই। স্বভাব অতিক্রম করিয়া কিছুই হইতে পারে না । আমরা দেখিতে পাই, একটা বস্তুতে যে যে গুণ আছে আর একটা বস্তুতে সেই সকল গুণগুলি না থাকিতে পারে। কিন্তু ষে সকল কারণসত্ত্বে এক বস্তুতে তৎসমুদায় গুণের আবির্ভাব হয়, যে আধারে ঐ সমস্ত কারণের অভাব আছে, কৌশলক্রমে যদি তাহাতে তত্তং কারণ ঘটাইতে পারা যায়, তাহা হইলে তদায়লদিক গুণও তাহাতে আসক্ত হইবে, ইহা নিশ্চিত। যোগ সাধনের ফলভূত যে কয়েকটা বিষয় প্রামাণিক বলিয়া আমরা গ্রহণ করিলাম, তাহ অবলীলা ক্রমে সিদ্ধ
পাতা:কল্পদ্রুম তৃতীয় খণ্ড.djvu/১১৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।