১৮২ কল্পক্রম । তখন দেহ এত লঘু হয় যে নিরবলম্ব হইয়া শূন্যে বায়ুর উপর স্থির থাকিতে পারে। এগুলি দৈনিক ঘটনা,অনেকেই প্রত্যক্ষ করিয়াছেন। অতএব ইহাতে কাছার ও সংশয় উপস্থিত হইতে পারে না । কিন্তু সমাহিত যোগী শ্বাসরোধ করিয়া অনশনে কি প্রকারে দীর্ঘকাল জীবিত থাকিতে পারেন, ইহা প্রধান জি জ্ঞাদ্য। যে বায়ু জীবের জীবন স্বরূপ, তিলদ্ধকাল যাহার অভাবে জগৎ অন্ধকার দেখতে হয় । বায়ু সংঘটিত আমজান শরীরের মার্জনী,—শরীর ধরণের এই গুলি প্রধান উপায় । প্রপান সাধন ব্যতিরেকে কি কারণে দেহ বিনষ্ট হয় না, ইহা নিরূপণ করা মুকঠিন। স্কৃপাকার স্তৃপাকার শরীরতত্ত্বশাস্ত্র সংগ্রহ করলেও আমাদের আকাঙ্ক্ষা নিবৃত্তির অত্যন্ন প্রত্যাশা আছে । বোধ করি, মনের মত উত্তর কিছুতে পাওয়া যাইবে না । প্রকৃতির অন্যান্য কারণ নির্দেশ করিতে হইলে যখন আমাদিগকে মৌনাবলম্বন করিতে হয়, তখন এ স্থলেও যে আমরা অধিক ৰাগ বিতণ্ডা করিব, তাহার সম্ভাবনা নহে। যাহা হউক, এককালে আমাদিগের মৌনী থাকাও উচিত নহে । আমরা শরীর-তত্ত্ব-সন্মত সমাধি-নিদানের বিষয় কিছু কিছু ব্যাখ্যা করিতেছি । স্বক্ষদর্শী ব্যক্তিগণের তাহ মন:পুত হইবে সন্দেহ নাই। বহুদিন শ্বাসরোধ করিয়া অনশনে থাকিলে যে জন্য প্রাণবিয়োগ হয় না তাহার অনেক কারণ আছে । সে কয়েকটা কারণ পশ্চাৎ নিদিষ্ট হইবে, তাহা সুচারুরূপে হৃদয়ঙ্গম করাইবার জন্য দীর্ঘ নিদ্রা, প্রগাঢ়চিন্তা এবং স্বল্পহার সম্পর্কে দুই চারিট কথা বলিতে হইতেছে । এই তিনের কর্তৃত্বে সৰ্ব্বদা দেহের বিশেষ পরিবর্তন হয়। শরীরমধ্যে তাহীদের কার্যকারিত বুঝিতে পারিলে প্রকৃত প্রস্তাব অনেক সুগম ও পরিদু ত হইবে । দীর্ঘ নিদ্রা—সময়ে সময়ে অনেক ব্যক্তির দেহের আশ্চৰ্য্য ভাবস্তর হইয়। পড়ে। প্রকৃতি এত নিদ্রানু হয় যে, কেহ মাসবিধি কেহ ছয় মাস পর্য্যন্ত অঘোর নিদ্রায় নিদ্রিত থাকে। স্থবিজ্ঞ চিকিৎসকগণের মস্তক ঘুরিয়া গিয়াছে, তাহারা কত শত উপায় অবলম্বন করিয়াছেন, কিন্তু কিছুতেই চৈতন্য সম্পাদন করিতে পারেন নাই। টিন্মবরি নামক স্থানে বিলটন নাম জনৈক প্রমজীবীর এমন আশ্চর্য্য অভ্যাস ছিল যে, সে মাসবিধিকাল ক্রমাগত নিদ্রিত থাকি ত। সেই স্থলুপ্তির সময় এক কণ জলবিন্দুও তাহার উদরস্থ হইত না, তথাপি শরীরের স্থূলতা বা লাবণ্যের ব্যতিক্রম ঘটত না । যতদিন সে নিদ্রিত থাকিত, কদাচিৎ একবার তাহার মধ্যে মলমূত্র ত্যাগ করিয়াছিল। এই
পাতা:কল্পদ্রুম তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৮২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।