○bーや কল্পক্রম। কিন্তু, ইহার রচনাপ্রণালী মার্জিত নহে। লেখার ধরণ দেখিয়া স্পষ্ট অনুমান হয়, গ্রন্থকার সংস্কৃত বিদ্যায় ভালরূপ ব্যুৎপন্ন ছিলেন না। আমরা অনেক যত্ন করিলাম ; কিন্তু রচয়িতার নাম পাইলাম না। কেহ কেহ বলেন, ঐ পুস্তক বাণেশ্বর বিদ্যালঙ্কারের রচিত ; কিন্তু সে কথায় আমাদের বিশ্বাস হয় না । বিদ্যালঙ্কারপ্রণীত অনেক সংস্কৃত শ্লোক আমরা পাঠ করিয়াছি, সে সমুদায়ে তাহাঁর বিদ্যার পরিচয় পাওয়া যায় । ক্ষিতীশবংশাবলীচরিত গ্রন্থ এ দেশের ইতিহাস, এ দেশে তাহার জন্ম ; কিন্তু, এ দেশে থাকিবার যোগ্য এক প্রাদেশ প্রমাণও স্থান পায় নাই । উদ্ভট শ্লোক হইলে চতুষ্পাঠীর বিদ্যারত্ন মহাশয়দিগের কণ্ঠাভরণ হইত ; কিন্তু এ একে ইতিহাস, তাতে আবার গদ্য, কাজেই এদেশ হইতে নিৰ্ব্বাসিত হইল। কিছু কাল হইল, জাৰ্ম্মণ রাজ্যে সংস্কৃত ভাষার বিশেষ অনুশীলন আরস্ত হইয়াছে। সরস্বতীর কৃপায় তথাকার লোকেরা এই দেবমাতৃক শাস্ত্রের স্বাদবান গুণ বিলক্ষণ অনুভব করিতে পারিয়াছেন। ক্ষিতীশ-বংশাবলীচরিত গিয়া সেই রাজ্যে আশ্রয় লইল । ১৮৫২ খৃঃ অব্দে পাশ সাহেব ইংরাজি অনুবাদ সমেত মূল পুস্তক মুদ্রিত ও প্রচারিত করেন। আমাদের দেশে এখন ঐ ইতিহাস দুই চারিট প্রধান স্থানে বিদ্যমান আছে। সাধারণ পাঠকে দেখিতে ইচ্ছা করিলে পাইবার যে নাই । কয়েক বৎসর অতীত হইল, কৃষ্ণনগর রাজ-পরিবারের দেওয়ান শ্ৰীযুক্ত বাবু কার্কিকেয়চন্দ্র রায় বাঙ্গালা ভাষায় ক্ষিতীশ-বংশাবলী-চরিত নামে এক খানি পুস্তক প্রণয়ন করেন। উহাতে সংস্কৃত ক্ষিতীশ-বংশাবলী চরিত গ্রন্থ হইতে অনেক বিষয় সংগৃহীত হইয়াছে। কিন্তু, সংস্কৃত পুস্তকথানিতে কি কি বিষয় কি প্রণালীতে লিখিত হইয়াছে, ইহা জানিবার জন্য যাহার উৎসুক হইবেন, বাঙ্গালা পুস্তকখানি পাঠ করিয়া তাহদের সে আশা পরিতৃপ্ত হইবে না। অতএব মদ্যকার প্রস্তাবের মুখ্য উদেশ্য কি, বোধ করি পাঠক এখন বুঝিতে পারিয়াছেন—আমরা মূল সংস্কৃত পুস্তক খানির রক্ষায় যত্নবান হইব। রাজতরঙ্গিণী অপেক্ষীও এথানি শ্রেষ্ঠ। কারণ,ইহা যথার্থ ইতিহাসের প্রণালীতে সংকলিত হইয়াছে। রাজতরঙ্গিণী একখানি প্রামাণিক পুস্তক বলিয়া আমরা স্বীকার করিতে পারি না, তাহার অনেক স্থানে অসদৃশ বর্ণনা আছে। কিন্তু আমাদের আলোচ্য গ্রন্থখানির সে দোষ নাই। অপিচ আমরা যে কেবল মূল গ্রন্থ লিখিয়া কল্পক্রমের উদর পূর্ণ কৱিৰ, তাহা নয়। আমরা উহার
পাতা:কল্পদ্রুম তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৮৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।