স্বর্ণ, রৌপ্য ও ভারতের আয় ব্যয়। ৪১৫ ব্যবসায়ে ব্ৰতী না হইবে, ততদিন কোন কাজে তাহদের নৈপুণ্য জন্মিৰে না, দেশের বাণিজ্য বাড়িবে না, স্বতরাং অবস্থা সমভাব থাকিয়৷ যাইবে । মানুষ অসভ্য অবস্থায় কিছু কিছু উন্নতি করিতে করতে যখন ব্যবসায় বিভাগের উপকারিতা বুঝিতে পারিল, তখন এক একটী লোক এক একটা স্বতন্ত্র কাজে ব্ৰতী হইল। কেহ কেবল বস্ত্র বুনিতে লাগিল, অন্য কোন কাজে হস্তক্ষেপ করিল না। বস্ত্র বুনতে বুনিতে দিন দিন তাহাতে বিলক্ষণ পরিপক্ক হইয়া উঠিল। এইরূপে কেহ তৈজস পত্র, কেহ স্বর্ণ রৌপ্যের অলস্কার, কেহ লোহার কাজ, কেহ মৃত্তিকার পাত্র গড়িতে লাগিল । ক্রমে আবার বিদ্যার অনুশীলন ও বিজ্ঞানের চর্চার সঙ্গে সঙ্গে শিল্প কৰ্ম্মেরও উৎকর্ষ সাধন হইল । কোন ব্যক্তি কেবল একটা স্বতন্ত্র কাজে নিযুক্ত থাকিলে দ্রব্য সামগ্রীর বিনিময় চাই । কারণ, যে কেবল বস্ত্র প্রস্তুত করিতেছে, তাহার চাস করি বার অবকাশ নাই—তাহার উদর পূৰ্ত্তির জন্য অন্ন চাই। আবার যে ব্যক্তি কেবল কৃষিকৰ্ম্ম করে, তাহার পরিধেয় বস্ত্র চাই, অতএব বস্ত্রের নিমিত্ত তাহাকে তন্তুবায়ের নিকট যাইতে হইবে। এইরূপে তত্ত্ববায়ের ধান্যের আবশ্যক হইলে সে কৃষককে বস্ত্ৰ দিয়া ধান্য লইতে পারে। কৃষকের লাঙ্গল আবশ্যক হইলে সে স্বত্রধরকে ধান্য দিয়া লাঙ্গল লইতে পারে। কিন্তু, এ কাজে অনেক অসুবিধা । এ প্রকার বিনিময় প্রথা সৰ্ব্বত্র সুগম নহে । তত্ত্ববায়ের ধান্যের আবশ্যক হইল, সে বস্ত্র লইয়া কৃষকের নিকট গেল, কিন্তু কৃষকের তখন বস্ত্রের প্রয়োজন নাই, তাহার তৈজস পত্র চাই । তত্ত্ববায় বস্ত্র লইয়া কাসারির নিকট চলিল। কাসারীর বস্ত্র অাছে, সে একটী লোহ অস্ত্র চায়, কাজেই কৰ্ম্মকারের যদি সে সময়ে বস্ত্রের প্রয়োজন থাকে, ওবে তস্তুবায় কাপড় দিয়া লৌহ অস্ত্র পাইতে পারে। পরে সেই লৌহ অস্ত্র কাসারীকে দিয়া তৈজসপত্র মিলিবে। আবার সেই তৈজসপত্র কৃষককে দিয়া তত্ত্ববায় ধান্য পাইবে । এই এক অসুবিধা । আর এক কথা—বিবেচনা কর, পাচ খানি কাপড় দিয়া এক মণ ধান্য মিলে। তোমার দুই মণ ধান্যের প্রয়োজন হইয়াছে, তুমি দশ খানি কাপড় লইয়া কৃষকের নিকট গেলে । কৃষকের তখন দুই থানি কাপড়ের প্রয়োজন, তোমাকে বাকি আট থt fন কাপড় লইয়া ছুটয় বেড়াইতে হইবে। এই
পাতা:কল্পদ্রুম তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪১৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।