8ፃbሥ . কল্পদ্রুম | বাস করে । তার কাছে সকলই নুতন, সকলই অদ্ভুত। গৃহে বসিয়া কত অলৌকিক কথা শুনিতে হয়, কতই অসম্ভব কথায় বিশ্বাস করিতে হয়। জ্ঞান বুদ্ধি বিবেচনা উন্মেষিত হইবার অবসর পায় না। সে দিন তুমি গৃহে বসিয়া শুনিতেছিলে—ইংলণ্ডের বিদ্যুৎপ্রভা ললনারা দেবকন্যা ; সুশীতল সিন্ধুজলে স্নান করিতে র্তাহারা মৰ্ত্ত্যে আসেন। কাফুিরা দৈত্যবংশ ; ইন্দ্রের অমরাবতীতে বড় উৎপাত করিত। যেমন তাদের বিকট দেহ, সেইরূপ তাদের বাসের বিভীষণ অরণ্য—সেখানে গাছের পল্লব পড়িলে টেকী হয়, পাতা পড়িলে কুলা হয় । নূতন নূতন গল্পে তোমার শ্রবণ মনকে উৎপ্লাবিত করিত। তখন হয় ত গৃহে একটা বিলাতী মেম দেখিলে সাক্ষাৎ ভগবতী ভাবিয়া গন্ধপুষ্পে পূজা করিতে ; কাফি দেখিলে হয় ত জাতিনাশের ভয়ে শালগ্রাম চন্দ্র লইয়া নিরদেশ হইতে । কিন্তু আজ বিজ্ঞানের বলে সেই মেমের মুসজ্জিত বিলাস মন্দির তোমার প্রতিবাসীর অট্টালিকা। তুমি এখানে ভাগীরথী জলে স্নান করিতে করিতে তুষার ধৌত ইংলণ্ডের সৌধবিহারিণী সুশীল। মেরীর সঙ্গে কাণে কাণে কথা কহিতেছ—প্রতি মুহূর্বে তারে তোমাকে বিলাতের সংবাদ আনিয়া দিতেছে। আবার দেখ পাল তুলিয়া পবনের আগে ছুটতে ছুটতে সাগর বক্ষ ভেদ করিয়া কত জাহাজ তোমার বাধা ঘাটের জেটাতে আসিয়া লাগিতেছে। তুমি ভ্রাতৃভাবে হাসিতে হাসিতে থিওডরের সঙ্গে আলিঙ্গন করিতেছ। জাহাজ হইতে কাপড়, ঝাড়, লণ্ঠন, কল, ঘড়ী প্রভৃতি কত সামগ্ৰী গুদামে তুলিতেছ। আজ তোমার কেমন বসন ভূষণ, কেমন অট্টালিকা, কেমন গৃহসজ্জা ! এখন ধৰ্ম্মপুত্র যুধিষ্ঠির একবার মৰ্বে আদিয়া বাবুর বৈঠকখানা দেখিলে ময়দানবের নিকট হইতে কড়ার কড়া তস্য কড়া মজুরী ফেরত লইতেন—ইন্দ্রগ্রন্থের সভা সে বৈঠকথানার কাছে ত গোয়াল ঘর । - পূৰ্ব্বাপেক্ষ ভারতবর্ষ এখন অনেক উন্নত হইয়াছে বটে ; কিন্তু আমাদের নিজের ক্ষমতায় এখনও কোন উন্নতিসাধন হয় নাই। এদেশের লোকের মেধাবী, ধৈর্য্যশীল ও বিদ্বান ; কিন্তু এ পর্য্যস্ত ভারতবর্ষে বিজ্ঞানশাস্ত্রের চর্চা কিছুই দেখা যায় না। আমাদের অবস্থার উন্নতির সারবান উপায় এখন ৪ দূরে পড়িয়া আছে। যতদিন তাহ নিকটবৰ্ত্তী না হইতেছে, বিজ্ঞানের অনুশীলন করিয়া যত দিন স্বহস্তে কল, কারখানা, করিতে না পারিতেছি ; তত দিন আমাদের ভদ্র নাই। অধিক কি এখন আমরা
পাতা:কল্পদ্রুম তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৮২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।