१88 কল্পক্রম। পৃথিবী বোরে । কেমন, তুমি ঘোরো না ?—ঘোরো বই কি,—সময় ঘোরে আর সময়ের সঙ্গে তুমিও জুরিয়া বেড়াইতেছ। সময় কুম্ভকারের চক্রের ন্যায় তোমার মন ও মতকে ঘুরাইয়া দিতেছে। আজ তুমি যে মত সমর্থন কর, কাল আর তাহা নাই,-জলোদ্ভিন্ন পদ্ম কলিকার ন্যায় একটা নুতন কথা তোমার মনে উদিত হইয়া পড়ে। ইউরোপে সংস্কৃত শাস্ত্রের বিশেষ অনুশীলন চলিতেছে । সেটা আমাদেরই গৌরবের কথা । ফলমূলাহারী বনবিলাসী ঋষিরা কুশাসনে বসিয়া যে হার গাথিয়াছেন,আজ হিরণ্যহম্ম্যবিলাসী উপাদেয় দ্রব্যোপভোগী সভ্যের মণিমঞ্চে বসিয়া অাদরে তাহ কণ্ঠে পরিতেছেন,—আমাদের এ পরম সৌভাগ্য। গাছের তলা—বিদ্যমন্দির, এণাজিন—আসন ; চেয়ার টেবল কিছুই ছিল না। পাতার ভিতর বেতালমুরে পার্থী ডাকিত, তাহাই ঋষিদের ঘড়ীর রব । তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ছিল না,গুরুর অধ্যাপনাকালে শিষ্যের পরিচয় পাইতেন । এক এক জন শিষ্য লিখিল বিদ্যার পরিদর্শী হইয়া গিয়াছেন। তখন দুস্কৃতির ভাগ অল্প ছিল,—ছাত্রের প্রশ্ন চুরী করিত না । কুলপতি ঋষিরা নিঃস্ব ছিলেন ; কিন্তু তাহদের ঔদার্য্যগুণ অপ্রমেয়। র্তাহারা অভ্যাগত সহস্ৰ সহস্র মুনি ঋষির আতিথেয় সংকার করিতেন । শিষ্যদিগকে বিদ্য শিক্ষা দিতেন ও ভরণপোষণ করিতেন । কিছুতেই কাতর ছিলেন না। র্তাহারা তিক্ৰিক্ষাগুণের পরা কাষ্ঠ দেখাইয়া গিয়াছেন। অধিক দিনের কথা নয়,—সে কৃতযুগের কথা উল্লেখ করিতে হইবে না । সে দিন পৰ্য্যন্ত আমাদের চতুষ্পাঠীর আর্য্যের ছাত্রদিগকে বিদ্যাদান ও অন্নদান করিয়া গিয়াছেন। নূতন রাজার শাসনাধীনে অধ্যাপকেরা এখন অনেক অংশে বৃত্তিহীন হইয়াছেন, কিন্তু তবু তাহদের বদান্যতাগুণ অস্তমিত হয় নাই। এখনও কত বিদ্যার্থী চতুাষ্পষ্ঠীতে লালিত পালিত হইয়া বিদ্যা শিক্ষা করিতেছে । . সংস্কৃত গুক্তির ধন—সেই দীন দরিদ্র দ্বিজfদগের সাধনের রত্ন। আমাদের কত পৌরুষ দেখ না, সভ্যজাতির মধ্যেও আজ সেই সংস্কৃতের কেমন আদর ! সকলে এই বিদ্যাকে যেন গলার হার করিয়া রাখিয়াছেন। তবে একটা ক্ষোভের কথা,—র্তাহার এমন উপাদেয় শাস্ত্রের সদ্ব্যবহার করিতে পারিলেন না,—অমৃতে গরল উঠিতে লাগিল । সেট মস্তনের দোষ । শুনিতে
পাতা:কল্পদ্রুম তৃতীয় খণ্ড.djvu/৭৫৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।