পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৭৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२.8 С কল্পদ্রুম। পার হইয়া কতকগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রাম দেখিতে দেখিতে বারদ্বারী বাগানে যাইয়া উপস্থিত হইলেন। Q. বরুণ। পিতামহ । বাগানের পাশ্বে এই যে স্থানটী দেখিতেছেন, ইহাকে লোকে মালিনীপোত কহে। এই যে অত্যর স্বরঙ্গের আকার দেখিতেছেন, লোকে বলে—এই সুরঙ্গ দিয়া সুন্দর বিদ্যার মন্দিরে যাতায়াত করিতেন । উপ। বরুণ কাক ! সুরঙ্গের মধ্যে চুকে দেখবো ? ব্ৰহ্মা। নারে! শৃগাল কুকুরে খেয়ে ফেলবে -ধরণ ! বিদ্যা সুন্দর কি ? বরুণ। আজ্ঞে। ভারতচন্দ্র রায় গুণাকর্কুকুত এক খানি পদ্যে লিখিত উপন্যাস গ্রন্থ। ঐ গ্রন্থের জায়ক মুন্ডুর, নায়িকা বিদ্য ; তজ্জন্যই পুস্তকের নাম বিদ্যাসুন্দর হইয়াছে। নায়ক নায়িক উভয়েই অতি সুন্দর ও সুশিক্ষিত ছিলেন। মুনার ভাটমুখে বিদ্যার রূপ বর্ণনা শ্রবণ করিয়া বৰ্দ্ধমানে আসেন এবং মালিনীর বাটীতে বাসা লন। মালিনী বিদ্যার নিকট যাতায়াত করিত, সুতরাং এক দিন মালিনী মুখে মুন্দরের রূপের কথা শুনিয়া বিদ্যা সুন্দরকে দেখিতে চান । মালিনীর যত্নে উভয়ের সাক্ষাৎও হয় । উভয়ে উভয়কে দেখিয়া অধৈর্য্য হইলেন । সুন্দর কালীকে স্তবে তুষ্ট করিয়া অতি গোপনে এমন কি মালিনীর অগোচরে নিজ বাসগৃহ হইতে বিদ্যার শয়ন ঘর পর্য্যন্ত এক সুরঙ্গ খনন করিয়া যাতায়াত করিতে লাগিলেন । এইরূপ যাত্বপয়াত করাতে অবিবাহিতা অবস্থায় বিদ্যার গর্ভসঞ্চার হইল। তখন রাজা ক্রোধান্ধ হইয়া তস্করকে ধৃত করিবার আজ্ঞা দিলে কোতয়ালের স্ত্রীবেশে বিদ্যার মন্দিরে শয়ন করিয়া থাকিল এবং সুন্দরকে ধরিল । রাজা সুন্দরকে মশানে লইয়া গিয়া প্রাণদণ্ডের আজ্ঞা দেন। মৃত্যুকালে,মুন্দর ভক্তিভাবে কালীর স্তব করাতে দেবী আসিয়া দেখা দিলেন । রাজা এই ঘটনায় চমৎকৃত হইয়া সুন্দরের সহিত বিদ্যার বিবাহ দেন। - ভারতচন্দ্র ঘটনাগুলি এমন সুন্দর ভাবে লিথিয়াছেন যে, পাঠ করিলে সত্য ঘটনা বলিয়া বোধ হয়। ভারতচন্দ্রের সহিত বৰ্দ্ধমানের রাজা অসদ্ব্যবহার করাতে তিনি সেই ক্রোধে কৃষ্ণনগরের রাজার সাহায্যে” পুস্তকখানি প্রণয়ন করেন, কিন্তু বৰ্দ্ধমানবাসীরা বিদ্যা মুন্দরের এই লীলা খেলাকে স্ব দেশের গৌরব মনে করিয়া অমান মুখে “ ঐ বিদ্যাপোত ” “ ঐ মালিনীপোত ” বলিয়া দেখাইয়া দেয় ।