রকম ঝড়ের বেশে দেখা দিয়েছিল, এই সময়কার ‘বর্ষশেষ’ কবিতার মধ্যে সেই কথাটি আছে।
‘বর্ষশেষ’ কবিতা সম্বন্ধে কবি অন্যত্র বলিয়াছেন—
১৩০৫ সালে বর্ষশেষ ও দিনশেষের মুহূর্তে একটা প্রকাণ্ড ঝড় দেখেছি। এই ঝড়ে আমার কাছে রুদ্রের আহ্বান এসেছিল। যা-কিছু পুরাতন ও জীর্ণ তার আসক্তি ত্যাগ করতে হবে— ঝড় এসে শুকনো পাতা উড়িয়ে দিয়ে সেই ডাক দিয়ে গেল। এমনিভাবে চিরনবীন যিনি তিনি প্রলয়কে পাঠিয়েছিলেন মোহের আবরণ উড়িয়ে দেবার জন্যে। তিনি জীর্ণতার আড়াল সরিয়ে দিয়ে আপনাকে প্রকাশ করলেন। ঝড় থামল। বললুম— অভ্যস্ত কর্ম নিয়ে এই-যে এত দিন কাটালুম, এতে তো চিত্ত প্রসন্ন হল না। যে আশ্রয় জীর্ণ হয়ে যায় তাকেও নিজের হাতে ভাঙতে মমতায় বাধা দেয়। ঝড় এসে আমার মনের ভিতরে তার ভিতকে নাড়া দিয়ে গেল, আমি বুঝলুম বেরিয়ে আসতে হবে।
‘বৈশাখ’ কবিতা সম্বন্ধে চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের পত্রের উত্তরে, ৪ কার্তিক ১৩৩৯ তারিখে, কবি তাঁহাকে লিখিয়াছেন—
এক জাতের কবিতা আছে যা লেখা হয় বাইরের দরজা বন্ধ ক’রে। সেগুলো হয়তো অতীতের স্মৃতি বা অনাগতের প্রত্যাশা, বাসনার অতৃপ্তি বা আকাঙ্ক্ষার আবেগ, কিম্বা রূপরচনার আগ্রহের উপর প্রতিষ্ঠিত। আবার এক জাতের কবিতা আছে যা মুক্তদ্বার অন্তরের সামগ্রী, বাইরের সমস্ত-কিছুকে আপনার সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে। তুমি আমার ‘বৈশাখ’ কবিতা সম্বন্ধে প্রশ্ন করেছ। বলা বাহুল্য, এটা শেষজাতীয় কবিতা। এর সঙ্গে জড়িত আছে রচনাকালের সমস্ত-কিছু··
১২৮