পাতা:কাঙাল হরিনাথ - জলধর সেন.pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R কাঙ্গাল হরিনাথ ৭৮ বৎসর অতীত হইল, নদীয়া জেলার অন্তঃপাতি কুমারখালি গ্রামে হরিনাথের জন্ম হয়। ৬৩ বৎসর বয়সে পুণ্য অক্ষয়তৃতীয়ায় তাহার তিরো- ? ধান ঘটে। যখন দয়ারসাগর পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্ৰ বিদ্যাসাগর এবং মনস্বী অক্ষয়কুমার দত্ত স্বদেশের উন্নতিকল্পে মাতৃভাষার সেবায় নিযুক্ত, সেই সময়ে দূর পল্লীগ্রামে এই দীন সাহিত্য-সেবক নীরবে যেরূপ উদ্যমের সহিত বিপৎপাতের প্রতি ভ্ৰক্ষেপ না করিয়া, “গ্রামবার্তা”র সম্পাদকরূপে মাতৃভাষার ভিতর দিয়া দেশের হিতসাধন-ব্ৰতে ব্ৰতী হইয়াছিলেন, সমস্ত বঙ্গসাহিত্যের ইতিহাসে আর কাহারও সেরূপ অদম্য উদ্যম এবং ঐকান্তিকতা আছে বলিয়া জানি না। কিন্তু বড়ই আক্ষেপের বিষয়, এইরূপ মহানুভব ব্যক্তির জীবনকাহিনী এতদিন সাহিত্যের ইতিহাসে বিশেষ কোনও সমাদরের স্থান অধিকার করিতে পারে নাই। ১২৪০ বঙ্গাব্দে কাঙ্গাল হরিনাথ নদীয়ার অন্তঃপাতি কুমারখালি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তঁহার জন্মগ্রহণের এক বৎসর পরেই তাহার মাতৃবিয়োগ হয়। সুতরাং মাতৃস্নেহ কি পদার্থ, তিনি তাহা জানিবার সৌভাগ্য লাভ করেন নাই। তাই তঁহার লেখার অনেক স্থানে এবং অনেক সঙ্গীতে সেই মাতৃ-স্নেহের জন্য একটা তীব্র আকাঙ্ক্ষা দেখিতে পাওয়া যায়। তিনি খুল্ল পিতামহীর স্নেহে ও স্তন্যদুগ্ধে প্ৰতিপালিত হইয়াছিলেন। র্তাহার মাতার মৃত্যুর পরে পিতা হলধর মজুমদার মহাশয় পুনরায় দারপরিগ্ৰহ করেন নাই, সেই কারণে তিনি সংসারে সম্পূর্ণ উদাসীন ছিলেন। বিষয়কাৰ্য্যে মনোযোগ না করায় পৈতৃকসম্পত্তি যাহা ছিল, সমস্তই নষ্ট হইয়া । যায়। পিতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষ করিয়া গৃহে ফিরিয়া হরিনাথ দেখিলেন। তাঁহার চতুর্দিক অন্ধকারপূর্ণ। বস্ত্র পরিবর্তন ও “হবিন্যান্ন গ্ৰহণ” করিবার সংস্থান পৰ্য্যন্ত নাই। যদিও বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয় গুরুজনদিগের স্নেহবাৎসল্য সে সকল কোনরূপে আসিয়া জুটিল, কিন্তু পিতৃশ্ৰাদ্ধ নিৰ্বাহ