পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্যক্তিকে ‘মধুর মিষ্টতাকে বুঝাইতে হইলে যেমন “চিনির মত, গুড়ের মত” ইত্যাদি দৃষ্টান্ত প্ৰদৰ্শন পূর্বক বুঝাইবার চেষ্টা পাইতে হয়, সেইরূপ তোমাকে সংক্ষেপে ভক্তিতত্ত্বের কিঞ্চিৎ আভাস বলিতে ইচ্ছা করিতেছি, অবধানপূর্বক শ্রবণ কর। সংসারে যাহারা আসিয়াছেন, আবাস স্থাপন পূর্বক মাতা পিতা ভ্রাতা ভগিনী স্ত্রীপুত্ৰ কন্যা প্রভৃতি পরিবারবর্গ লইয়া বাস করিতেছেন এবং সংসারের অসহনীয় জ্বালা যন্ত্রণায় মৰ্ম্মাহত হইয়া “এই সংসার ত্যাগ করি করি” করিয়া পুনরায় সেই সংসারের জ্বালাযন্ত্রণা-সারিতে আত্মবিসর্জন করিতেছেন, তাহাদিগের সম্বন্ধে ভালবাসা পদার্থ যে কি এবং ভালবাসার বিশ্বমোহিনী শক্তির শক্তি যে কতদূর, ইহা আর বুঝাইবার অপেক্ষা নাই। একবার এই ভালবাসার ভুবনমোহিনী মহীয়সী। শক্তির প্রতি নিবিষ্টচিত্ত হইয়া অন্তদৃষ্টি প্রসারণ কর, দেখিবে— অনন্ত জীব-জগৎ কেবল ভালবাসাপাশে আবদ্ধ হইয়াও নিয়ত পরিভ্রান্ত হইতেছে। পিতা মাতা যে সন্তানের লালনপালনে নিজ প্ৰাণকে উপেক্ষা করিয়া যারপরনাই কষ্ট স্বীকার করিতেছেন ; সতী রমণী যে, পতির জন্য অসহনীয় যন্ত্রণাকেও হৃদয়-সহচরী করিয়া থাকেন ; স্বামী যে, ংসারের মহাবিষকে হৃদয়ে পোষণ করিয়াও পত্নীর শুভাকাঙ্ক্ষী হয়েন ; সন্তান যে, বহুকষ্টে পতিত হইলেও প্ৰাণ থাকিতে পিতামাতার সেবা শুশ্ৰষায় বিরত হয়েন না এবং ভ্রাতা যে ভ্ৰাতার জন্য জীবন দান করিতেও ভীত বা কুষ্ঠিত হয়েন না, একমাত্র ভালবাসাই এই সমুদায়ের মূল কারণ। এই ভালবাসার আর একটী বিশেষ শক্তি এই যে, যাহার সহিত আমার । কোন পুরুষে সম্বন্ধ অর্থাৎ জাতিগত, বর্ণগত, সমাজগত বা আশ্রমাগত কোন সংস্রব নাই এবং কোন কালে সম্বন্ধ হইবার সম্ভাবনাও যে স্থলে কল্পনার বহিভূত, সেই স্থলে এই ভালবাসা এমনই সম্বন্ধপাত করে যে, > R>