পাতা:কাদম্বরী.djvu/১০৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
কাদম্বরী।
৯৯

অনুমান হয়, পূর্ব্বদিকে আলোক দেখিলে যেরূপ রবির উদয় জানা যায়, মলয়ানিল বহিলে যেরূপ বসন্ত কালের সমাগম বোধ হয়, কাশকুসুম বিকসিত হইলে যেরূপ শরদারম্ভ সূচিত হয়, সেইরূপ এই শুভ ঘটনা অচিরাৎ আপনার গন্ধর্ব্বনগরে গমনের সূচনা করিতেছে। গন্ধর্ব্বরাজকুমারী কাদম্বরীর সহিতও আপনার সমাগম সম্পন্ন হইবেক, সন্দেহ করিবেন না। কেহ কখন কি চন্দ্রমাকে জ্যোৎস্নারহিত হইতে দেখিয়াছে? লতাশূন্য উদ্যান কি কখন কাহারও দৃষ্টিপথে পতিত হইয়াছে? কিন্তু বৈশম্পায়ন আসিতে ও তাঁহার সহিত পরামর্শ করিয়া আপনার গন্ধর্ব্বনগরে যাত্রা করিতে বিলম্ব হইবে বোধ হয়। কাদম্বরীর যেরূপ শরীরের অবস্থা তাহা রাজকুমারকে পূর্ব্বেই নিবেদন করিয়াছি, অতএব আমি অগ্রসর হইয়া আপনার আগমনবার্ত্তা দ্বারা তাঁহাকে আশ্বাস প্রদান করিতে অভিলাষ করি।

কেয়ূরকের ন্যায়ানুগত মধুর বাক্য শুনিয়া চন্দ্রাপীড় পরম পরিতুষ্ট হইলেন। কহিলেন, কেয়ূরক! ভাল যুক্তিযুক্ত কথা বলিয়াছ। এতাদৃশী দেশকালজ্ঞতা ও বুদ্ধিমত্তা কাহারও দেখিতে পাওয়া যায় না। তুমি শীঘ্র গমন কর এবং আমাদিগের কুশল সংবাদ ও আগমনবার্ত্তা দ্বারা প্রিয়তমার প্রাণ রক্ষা কর। প্রত্যয়ের নিমিত্ত পত্রলেখাকেও তোমার সহিত পাঠাইয়া দিতেছি। পরে মেঘনাদকে ডাকাইয়া কহিলেন, মেঘনাদ! পূর্ব্বে তোমাকে যে স্থানে রাখিয়া আসিয়াছিলাম, পত্রলেখা ও কেয়ূরককে সমভিব্যাহারে লইয়া পুনর্ব্বার তথায় যাও। শুনিলাম বৈশম্পায়ন আসিতেছেন, তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিয়া আমিও তথায় যাইতেছি! মেঘনাদ যে আজ্ঞা বলিয়া গমনের উদ্যোগ করিতে গেল। রাজকুমার কেয়ূরককে গাঢ় আলিঙ্গন করিয়া বহুমূল্যের কর্ণাভরণ পারিতোষিক দিলেন। বাষ্পাকুল লোচনে কহিলেন, কেয়ূরক! তুমি প্রিয়তমার কোন সন্দেশবাক্য আনিতে পার নাই, সুতরাং প্রতিসন্দেশ তোমাকে কি বলিয়া দিব। পত্রলেখা যাইতেছে ইহার মুখে প্রিয়-