কপিঞ্জল কহিলেন, জলপ্রবেশানন্তর যে যে ঘটনা হইয়াছে তাহা আমি অবগত নহি। চন্দ্রের অবতার চন্দ্রাপীড় ও পুণ্ডরীকের অবতার বৈশম্পায়ন কোথায় জন্মগ্রহণ করিয়াছেন এবং পত্রলেখা কোথা গিয়াছে, জানিবার নিমিত্ত কালত্রয়দর্শী ভগবান্ শ্বেতকেতুর নিকট গমন করি। এই বলিয়া কপিঞ্জল গগনমার্গে উঠিলেন।
তিনি প্রস্থান করিলে রাজপরিজনেরা বিস্ময়ে শোক সন্তাপ বিস্মৃত হইল। চন্দ্রাপীড়ের ও বৈশম্পায়নের পুনরুজ্জীবন পর্য্যন্ত এই স্থানে থাকিতে হইবেক স্থির করিয়া বাসস্থান নিরূপণ করিল ও তথায় অবস্থিতি করিতে লাগিল। কাদম্বরী মহাশ্বেতাকে কহিলেন, প্রিয়সখি! বিধাতা এই হতভাগিনীদিগকে দুঃখের সমান অংশভাগিনী করিয়া পরস্পর দৃঢ়তর সখ্যবন্ধন করিয়া দিলেন। আজি তোমাকে প্রিয়সখী বলিয়া সম্বোধন করিতে লজ্জা বোধ হইতেছে না। ফলতঃ এত দিনের পর আজি আমি তোমার যথার্থ প্রিয়সখী হইলাম। এক্ষণে কর্ত্তব্য কি উপদেশ দাও। কি করিলে শ্রেয়ঃ হইবে কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না। মহাশ্বেতা উত্তর করিলেন, প্রিয়সখি! কি উপদেশ দিব! আশাকে কেহ অতিক্রম করিতে পারে না। আশা লোকদিগকে যে পথে লইয়া যায়, লোকেরা সেই পথে যায়। আমি কেবল কথামাত্রের আশ্বাসে প্রাণত্যাগ করিতে পারি নাই। তুমি ত কপিঞ্জলের মুখে সমুদায় বৃত্তান্ত বিশেষ রূপে অবগত হইলে। যাবৎ চন্দ্রাপীড়ের শরীর অবিকৃত থাকে, তাবৎ ইহার রক্ষণাবেক্ষণ কর। শুভ ফল প্রাপ্তির আশয়ে লোকে অপ্রত্যক্ষ দেবতার কাষ্ঠময়, মৃন্ময়, প্রস্তরময় প্রতিমাও পূজা করিয়া থাকে। তুমি ত প্রত্যক্ষ দেবতা চন্দ্রমার সাক্ষাৎ মূর্ত্তি লাভ করিয়াছ। তোমার ভাগ্যের পরিসীমা নাই এক্ষণে যত্ন পূর্ব্বক রক্ষা ও ভক্তিভাবে পরিচর্য্যা কর।
মদলেখা ও তরলিকা ধরাধরি করিয়া শীত, বাত, আতপ ও বৃষ্টির জল না লাগে এমন স্থানে, এক শিলার উপরে চন্দ্রাপীড়ের