পাতা:কাদম্বরী.djvu/১২৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
কাদম্বরী।
১২৫

কপিঞ্জল যে শাপবিবরণ বর্ণন করিয়া গেলেন এবং আকাশবাণী দ্বারা যাহা ব্যক্ত হইয়াছে, তাহা সত্য, সংশয় নাই। কাদম্বরী আনন্দিত মনে মহাশ্বেতাকে, তদনন্তর চন্দ্রাপীড়ের সঙ্গিগণকে সেই শরীর দেখাইলেন। সঙ্গিগণ বিস্ময়বিকসিত নয়নে যুবরাজের শরীরশোভা দেখিতে লাগিল। কৃতাঞ্জলিপুটে কহিল, দেবি! মৃত দেহ অবিকৃত থাকে, ইহা আমরা কখন দেখি নাই, শ্রবণও করি নাই। ইহা অতি আশ্চর্য্য ব্যাপার সন্দেহ নাই। এক্ষণে আপনার প্রভাববলে ও তপস্যার ফলে যুবরাজ পুনর্জীবিত হইলে সকলে চরিতার্থ হই। পর দিনও সেইরূপ উজ্জ্বল শরীরসৌষ্ঠব দেখিয়া আকাশবাণীর কোন অংশে আর সংশয় রহিল না। তখন কাদম্বরী কহিলেন, মদলেখে! আশার শেষ পর্য্যন্ত এই স্থানে অবস্থিতি করিতে হইবেক। অতএব তুমি বাটী যাও ও এই বিস্ময়াবহ ব্যাপার পিতা মাতার কর্ণগোচর কর। তাঁহারা যাহাতে বিরূপ না ভাবেন, দুঃখিত না হন এবং এখানে না আইসেন, এরূপ করিও। এখানে আসিলে তাঁহাদিগকে দেখিয়া শোকাবেগ ধারণ করিতে পারিব না। সেই বিষম সময়ে অমঙ্গলভয়ে আমার নেত্রযুগল হইতে অশ্রুজল বহির্গত হয় নাই। এক্ষণে জীবিতনাথের পুনঃপ্রাপ্তিবিষয়ে নিঃসন্দিগ্ধচিত্ত হইয়াও কেন বৃথা রোদন দ্বারা প্রিয়তমের অমঙ্গল ঘটাইব? এই বলিয়া মদলেখাকে বিদায় করিলেন।

মদলেখা গন্ধর্ব্বনগর হইতে প্রত্যাগত হইয়া কহিল, ভর্ত্তৃদারিকে! তোমার অভীষ্টসিদ্ধি হইয়াছে। মহারাজ ও মহিষী আদ্যোপান্ত সমুদায় শ্রবণ করিয়া সস্নেহে কহিলেন, “বৎসে কাদম্বরি! চন্দ্রসমীপবর্ত্তিনী রোহিণীর ন্যায় তোমাকে জামাতার পার্শ্ববর্ত্তিনী দেখিব ইহা মনে প্রত্যাশা ছিল না। স্বাভিলষিত ভর্ত্তাকে স্বয়ং বরণ করিয়াছ, তিনি আবার চন্দ্রমার অবতার শুনিয়া সাতিশয় আনন্দিত হইলাম। শাপাবসানে জামাতা জীবিত হইলে, তাঁহার সহচারিণী তোমাকে দেখিয়া জীবনের সার্থকতা সম্পাদন করিব। এক্ষণে আকাশবাণীর অনুসারে ধর্ম্ম কর্ম্মের অনুষ্ঠান কর। যাহাতে