কাদম্বরী
উপক্রমণিকা
শূদ্রকনামে অসাধারণধীশক্তিসম্পন্ন অতিবদান্য মহাবল পরাক্রান্ত প্রবলপ্রতাপ নরপতি ছিলেন। বিদিশানাম্নী নগরী তাঁহার রাজধানী ছিল। যে স্থানে বেত্রবতী নদী বেগবতী হইয়া প্রবাহিত হইতেছে। রাজা নিজ বাহুবলে ও পরাক্রমে ক্রমে ক্রমে অশেষ দেশ জয় করিয়া সসাগরা ধরায় আপন আধিপত্য স্থাপন পূর্ব্বক সুখে ও নিরুদ্বেগচিত্তে সাম্রাজ্য ভোগ করেন। একদা প্রাতঃকালে আপন অমাত্য কুমারপালিত ও অন্যান্য রাজকুমারের সহিত সভামণ্ডপে বসিয়া আছেন, এমন সময়ে প্রতীহারী আসিয়া প্রণাম করিয়া কৃতাঞ্জলিপুটে নিবেদন করিল মহারাজ! দক্ষিণাপথ হইতে এক চণ্ডালকন্যা আসিয়াছে। তাহার সমভিব্যাহারে এক শুকপক্ষী আছে। কহিল, “মহারাজ সকল রত্নের আকর, এই নিমিত্ত এই পক্ষীরত্ন তদীয় পাদপদ্মে সমর্পণ করিতে আসিয়াছি।” দ্বারে দণ্ডায়মান আছে অনুমতি হইলে আসিয়া পাদপদ্ম দর্শন করে।
রাজা প্রতিহারীর বাক্য শুনিয়া সাতিশয় কৌতুকাবিষ্ট হইলেন এবং সমীপবর্ত্তী সভাসদগণের মুখাবলোকন পূর্ব্বক কহিলেন কি হানি আছে লইয়া আইস। প্রতিহারী যে আজ্ঞা বলিয়া চণ্ডালকন্যাকে সঙ্গে করিয়া আনিল। চণ্ডালকন্যা সভামণ্ডপে প্রবেশিয়া দেখিল উপরে মনোহর চন্দ্রাতপ, চন্দ্রাতপের চতুর্দ্দিকে মুক্তাকলাপ, মালার ন্যায় শোভা পাইতেছে; নিম্নে রাজা স্বর্ণময় অলঙ্কারে