কাদম্বরী নাটক । :) বৈশ । (মহাশ্বেতার দিকে স্থিরনেত্ৰে দেখিয়া ক্ষণবিলম্বে) ললনে! আমাকে কি তোমার পরিচিত বলে বোধ হয় না? - মহা । মহাশয়! আপনাকে আমি জন্মাবধি কখন দেখি নাই। বৈশ । (স্বগতঃ) কি আশ্চর্ষ্য ! আমি স্বপ্ন-কপিতের ন্যায় আজ অগণ্য পদার্থ দৃষ্টি করছি,—সমস্তই যেন আমার পরিচিত, কিন্তু কিছুতেই মনের ক্ষোভ দূর হচ্ছে না। (মহাশ্বেতার প্রতি) সুন্দরি! অদ্য এই উপবনে প্রবেশ করে, নানা প্রকার অত্যাশ্চর্য্য বিষয় দর্শন করলেম, কিন্তু তন্মধ্যে তোমারই ভুলনা নাই। প্রফুল্ল সরোজিনীর পক্ষে শীতের হিম বর্ষণ যেমন মহা অহিতকর, তোমার এই মুকমল কোমল লতিকার ন্যায় শরীর ঈদৃশ তরুণ যৌবনাবস্থায় তপস্যার আড়ম্বরেও তদনুৰূপ। কি আশ্চৰ্য্য! কামিনীগণ যদ্যপি ঈদৃশাবস্থায় ইন্দ্রিয় মুখে পরাজুর্থ হয়ে, যোগসাধনে মন দেয়, তাহলে কুমুম চাপের আর কি গরিমা রইলো? কোকিলের কুহুরব, মধূপের ঝঙ্কার, মলয়ের সৌগন্ধীয় বায়ু আর কে আদৃত করবে ? সরলে! এ সকল তোমার পক্ষে শোভনীয় নহে। অমন সুদৃশ্ব অঙ্গ লাবণ্য কখন ভস্মাবৃত থাকা উচিত নয়—প্রিয়জনের অভাবে অমন হেমাঙ্গ কে সমাদৃত করবে ? তর। মহাশয়! আপনি অপরিচিত, দেবীর প্রতি ওৰূপ সম্বোধন করে ওঁর ক্রোধানল প্রজ্জ্বলিত করবেন না। দেখছেন, উনি পাশুপত-ব্রতাবলম্বিনী, ওঁকে ওৰূপ উক্তি করায় মহাপাপ সঞ্চয় করা হয়, আপনার কোন কাৰ্য্য থাকে অন্যত্রে গমন করুন। বৈশ। হাঃ সখি! আমি কি তোমার দেবীর নিকট অপরাধী হয়েছি? আচ্ছ, তবে অবশ্য এর প্রতিবিধান করবো। আর আপনাদের বিরক্ত করবে না, এই চল্লেম। [ দ্রুত্বপদে প্রস্থান ।
পাতা:কাদম্বরী নাটক.djvu/৪৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।