SNEb~ কাদম্বরী । অবস্থিতি করিয়া, রজনী প্রভাত না হইতেই সমভিব্যাহারী লোকদিগকে গমনের আদেশ দিলেন ; আপনি অগ্রে অগ্ৰে চলিলেন । যাইতে যাইতে মনে মনে কত মনোরথ করিতে লাগিলেন ; স্বহদের অজ্ঞাতসারে তথায় উপস্থিত হইয়া সহসা কণ্ঠ ধারণপূর্বক, কোথায় পলায়ন করিতেছ, বলিয়া প্রিয় সখার লজ্জা ভঞ্জন করিয়া দিব। তদনন্তর মহাশ্বেতার আশ্রমে উপস্থিত হইব। তিনি আমাকে দেখিয়া সাতিশয় আহিলাদিত হইবেন, সন্দেহ নাই। মঙ্গ:শ্বেতার আশ্রমে সৈন্য সামন্ত রাখিয়া হেমকূটে গমন করিব তথার প্রিয়তমার প্রফুল্ল মুখকমল দর্শনে নয়নযুগল চরিতীৰ্থ করিব ও মহাসমারোহে তাহার পাণিগ্রহণ করিয়া জীবন সফল ও আত্মাকে পরিতৃপ্ত করিব। অনন্তর প্রিয়তমার অনুমতি লইয়া মদলেখার সহিত পরিণয় সম্পাদন দ্বারা বন্ধুর সংসারবৈরাগ্য নিবারণ করিয়া দিব । এইরূপ মনোরথ করিতে করিতে ক্ষুধা, তৃষ্ণা, পথশ্রম ও জাগরণজন্য ক্লেশকে ক্লেশ বোধ না করিয়া দিনঘামিনী গমন করিতে লাগিলেন । ৮ পথে বর্ষাকাল উপস্থিত। নীলবর্ণ মেঘমালায় গগনমণ্ডল আচ্ছত হইল। দিনকর আর দৃষ্টিগোচর হয় না। চতুদিকে মেঘ, দশ দিক অন্ধকার। দিবা রাত্রির কিছুই বিশেষ রহিল না। ঘনঘটার ঘোরতর গভীর গর্জন ও ক্ষণপ্রভার দুঃসহ প্রভা ভয়ানক হইয়া উঠিল। মধ্যে মধ্যে বজ্রাঘাত ও শিলাবৃষ্টি। অনবরত মুষলধারে বৃষ্টি হওয়াতে, নদী সকল বৰ্দ্ধিত হইয়া উভয় কূল ভগ্ন করিয়া ভীষণ বেগে প্রবাহিত হইল। সরোবর, পুষ্করিণী, নদ, নদী পরিপূর্ণ হইয়া গেল। চতুর্দিক জলময় ও পথ পঙ্কময়।
পাতা:কাদম্বরী (চতুর্থ সংস্করণ).djvu/১৮১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।