S33 কাদম্বরী । দিগ্বলয় জ্যোৎস্নাময় হইলে তরলিকা শিলাতলে শয়ন করিয়া নিদ্রায় অচেতন হইল। গ্রীষ্মের নিমিত্ত গুহার অভ্যন্তরে নিদ্র না হওয়াতে আমি বহিঃস্থিত এক শিলাতলে অঙ্গ নিক্ষেপ করির গগনোদিত সুধাংশুর প্রতি দৃষ্টি পাত করিয়া রছিলাম। মন্দ মন্দ সমীরণ গাত্রে সুধাবুষ্টির স্থায় বোধ হইতে লাগিল। সেই সময়ে দেব পুণ্ডরীকের বিস্ময়কর ব্যাপার স্মৃতিপথারূঢ় হইল । র্তাহার গুণ স্মরণ হওয়াতে খেদ করিয়া মনে মনে কহিলাম আমি কি হতভাগিনী ! আমার দুর্ভাগ্যবশতঃ বুঝি, দেববাক্যও মিথ্য। হইল। কই । প্রিয়তমের সহিত সমাগমের কোন উপায় দেখিতেছি না। কপিঞ্জল সেই গমন করিয়াছেন অদ্যাপি প্রত্যাগত হইলেন না। এইরূপ নানা প্রকার চিন্তা করিতেছি এমন সময়ে দূর হইতে পদসঞ্চারের শব্দ শুনিতে পাইলাম। যে দিকে শব হইতেছিল সেই দিকে দৃষ্টি পাত করিয়া জ্যোৎস্নার আলোকে দূর হইতে দেখিলাম সেই ব্রাহ্মণকুমার উন্মত্তের ন্যায় দুই বাহু প্রসারিত করিয়া দৌড়িয়া আলিতেছে। তাহার সেইরূপ ভয়ঙ্কর আকার দেখিয়া সাতিশয় শঙ্কা জন্মিল । ভাবিলাম কি পাপ ! উন্মত্তটা আসিয়া সহসা যদি গাত্র স্পর্শ করে, তৎক্ষণাৎ এই অপবিত্র কলেবর পরিত্যাগ করিব। এত দিনে প্ৰাণেশ্বরের পুনর্দর্শন প্রত্যাশার মূলোচ্ছেদ হইল। এত কাল বৃথা কষ্ট ভোগ করিলাম। ১৪ এইরূপ চিন্তা করিতেছি এমন সময়ে নিকটে আসিয়া কহিল চন্দ্ৰমুখি ! ঐ দেখ, কুসুমশরের প্রধান সহায় চন্দ্ৰমা আমাকে বধ করিতে আসিতেছে। এক্ষণে তোমার শরণাপন্ন হইলাম, যাহাতে
পাতা:কাদম্বরী (চতুর্থ সংস্করণ).djvu/১৮৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।