গ্রন্থ ও গ্রন্থকারের পরিচয় —একদিন ভগবান স্বৰ্য্যদেব, যিনি নব নব কমলকলিকাগুলিকে প্রস্ফুটিত করেন, কিয়ং পরিমাণে রক্তিমবর্ণ ত্যাগ করিয়া আকাশের কিছু উপরে উঠিলে সভামণ্ডপে অবস্থিত রাজার নিকটে প্রতীহারী উপস্থিত হইল। রমণীর ব্যবহারবিরুদ্ধ তরবারি তাহার বাম পার্শ্বে ঝুলিতেছিল বলিয়া চন্দনতরুর পার্থে সৰ্প থাকিলে যেমন রমণীয় অথচ ভীষণ আকৃতি দেখায়, তাহাকে সেইরূপ দেখাইতেছিল ; চন্দনের ঘন অনুলেপনে তাহার স্তনদেশ শুভ্রবর্ণ ধারণ করিয়াছিল বলিয়া ঐরাবতের মাথার মাংসপিণ্ড মন্দাকিনীর জলে নিমগ্ন হইতে থাকিলে যেমন দেখায়, তাহাকে সেইরূপ দেখাইতেছিল ; সমবেত রাজগণের মুকুটমণিতে তাহার প্রতিবিম্ব পড়িয়াছিল বলিয়। মনে হইতেছিল, যেন তাহারা মূৰ্ত্তিমতী রাজাজ্ঞা শিরে ধারণ করিয়া আছেন ; কলহংসের ন্যায় শ্বেতবসনা তাহাকে শরৎকালে কলহংসতুল্য নিৰ্ম্মল আকাশের মত দেখাইতেছিল ; পরশুরামের কুঠারের ধারের ন্যায় সে সমস্ত রাজমণ্ডলীকে বশীভূত করিয়াছিল ; বিন্ধ্যবনভূমির ন্যায় সে বেত্ৰহস্ত ছিল ; তাহাকে রাজ্যের মূৰ্ত্তিমতী অধিষ্ঠাত্রী দেবীর স্তায় দেখাইতেছিল। সেই প্রতীহারী ভূতলে জামু- ও করকমলযুগল সংস্থাপিত করিয়া সবিনয়ে বলিল, “দেব, ক্রুদ্ধ দেবরাজের হুঙ্কারে স্বর্গারোহণকারী অধঃপতিত ত্রিশঙ্কু রাজার রাজলক্ষ্মীর ন্যায় দক্ষিণাপথ হইতে আগত এক চণ্ডালকন্যা পিঞ্জরস্থিত একটি শুকপক্ষিহস্তে দ্বারে উপনীত হইয়া আপনাকে জানাইতেছে,—“দেব, আপনি সমুদ্রের ন্তায় সমগ্র ভূমণ্ডলতলস্থ সকল রত্বের একমাত্র আধার ;
পাতা:কাদম্বরী (চতুর্থ সংস্করণ).djvu/২৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।