গ্রন্থ ও গ্রন্থকারের পরিচয় জনসনের জীবনচরিতের যে প্রারম্ভ-অংশ উদ্ধৃত হইয়াছে, তাহার ভাষা আলোচনা করিতেছি। আমি হলফ করিয়া বলিতে পারি, তারাশঙ্করের লেখা বলিয়া না দিলে, আধুনিক এমন কোন সাহিত্য-সমালোচক নাই যিনি ঐ অংশ পড়িয়া বলিয়া দিতে পারেন যে উহা তারাশঙ্করের লেখনী-প্রস্থত। এ সম্বন্ধে মুকুমারবাবু কি বলেন ? ইহাও কি ‘সংস্কৃত-ঘেষা ও বিশিষ্ট্য-বর্জিত ? ‘বাল্যাবধি” ও “অকৰ্ম্মণ্য ভিন্ন অন্য কোন সংস্কৃত-ঘেষা পদ এই অংশের মধ্যে খুজিয়া পাই নাই। শারীরিক রোগে তাহার একটি চক্ষু একবারে অকৰ্ম্মণ্য হইয়া যায় ।”—এই বাক্যটিকে আরও সহজ, সরল ও অনায়াস-বোধ করা যায় কি ? আজকালকার ন্যাকামোর ভাষায় ইহার ভাব ঘুরাইয়া-ফিরাইয়া অনেক প্রকারে প্রকাশিত হইতে পারে, কিন্তু তাহাতে ভাষার প্রসাদগুণ বা হৃদয়গ্রাহিত বাড়ে কি ? এই জীবনচরিত আগাগোড়া পাঠ করিয়া দেখিয়াছি, মনে হয় যেন আধুনিক ‘আনন্দবাজার বা বসুমতী’ পড়িতেছি। এখনকার দিনে কেবল একজন মাত্র সাহিত্যিক লেখার মধ্যে সংস্কৃতবহুল শব্দ এবং সমাসবদ্ধ পদ খুব বেশি-বেশি ব্যবহার করেন—তিনি শ্রদ্ধেয় শ্ৰীযুক্ত হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ ; অথচ তাহার ভাষা অতিশয় মনোরম, শ্রুতিমধুর ও হৃদয়গ্রাহী। কিন্তু তারাশঙ্করপ্রণীত জীবনচরিতের ভাষা হেমেন্দ্রবাবুর ভাষা অপেক্ষাও যে সহজ, সরল ও মোলায়েম-একথা সাহস করিয়া বলিতে পারি। পাতা উণ্টাইয়া এই অংশ পাঠককে পুনরায় পাঠ করিতে অনুরোধ
পাতা:কাদম্বরী (চতুর্থ সংস্করণ).djvu/৩৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।