39 কাদম্বরী । অনতিদূরে পম্পীনামক সরোবর আছে। ঐ সরোবরের পশ্চিম তীরে ভগবান রামচন্দ্র শর দ্বারা যে সপ্ততাল বিদ্ধ করিয়াছিলেন তাহার নিকটে এক প্রকাণ্ড শান্মলী বৃক্ষ আছে। বৃহৎ এক অজগর সর্প সৰ্ব্বদা ঐ বৃক্ষের মূলদেশ বেষ্টন কবিয়া থাকাতে, বোধ হয় যেন, আলবাল রহিয়াছে। উহার শাখা প্রশাখা সকল এরূপ উন্নত ও বিস্তৃত, বোধ হয় যেন, হস্তপ্রসারণপূর্বক গগনমণ্ডলের দৈর্ঘ্য পরিমাণ করিতে উঠিতেছে। স্বন্ধদেশ এরূপ উচ্চ, বোধ হয় যেন, একবারে পৃথিবীর চতুর্দিক অবলোকন করিবার আশয়ে মুখ বাড়াইতেছে। ঐ তরুর কোটরে, শাখাগ্রে, স্কন্ধদেশে ও বহুলবিবরে কুলায় নিৰ্ম্মাণ করিয়া শুক শারিক প্রভৃতি নানাবিধ পক্ষিগণ মুখে বাস করে। তরু অতিশয় প্রাচীন সুতরাং বিরলপল্লব হইয়াও পক্ষিশাবকদিগের দিবানিশি অবস্থিতি প্রযুক্ত সৰ্ব্বদা নিবিড়পল্লবাকীর্ণ বোধ হয়। কোন কোন পক্ষিশাবকের পক্ষেপ্তেদ হয় নাই তাহাদিগকে ঐ বৃক্ষের ফল বলিয়া ভ্রাস্তি জন্মে। পক্ষীরা রাত্রিকালে বৃক্ষকোটরে আপন আপন নীড়ে নিদ্রা যায়। প্রভাত হইলে আহারের অন্বেষণে শ্রেণীবদ্ধ হইয় গগনমার্গে উডউীন হয়। তৎকালে বোধ হয় যেন, হরিদ্বর্ণদূৰ্ব্বাদলপরিপূর্ণ ক্ষেত্র আকাশমার্গ দিয়া চলিয়া যাইতেছে। তাহারা দিগিগন্তে গমন করিয়া আহরিদ্রব্য অন্বেষণপূর্বক আপনারা ভোজন করে এবং শাবকদিগের নিমিত্ত চঞ্চুপুটে করিয়া খাদ্যসামগ্ৰী আনে ও যত্বপূৰ্ব্বক আহার করাইয়া দেয়। ৮ সেই মহীরুহের এক জীর্ণ কোটরে আমার পিতা মাতা বাস করিতেন। কালক্রমে মাতা গর্ভবতী হইলেন এবং আমাকে প্রসব করিয়া স্থতিকাপীড়ায় অভিভূত হইয়া প্রাণ ত্যাগ করিলেন। পিতা
পাতা:কাদম্বরী (চতুর্থ সংস্করণ).djvu/৪৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।