কাদম্বরী । ఏ সন্দেহ নাই । এইরূপ চিন্তা করিতেছিলাম এমন সময়ে মৃগয়াজন্য শ্রান্তি দূর করিবার নিমিত্ত তাহার। আমাদিগের আবাসতরুতলের ছায়ায় আসির উপবিষ্ট হইল। অনতিদূরস্থিত সরোবর হইতে জল ও মৃণাল আনিয়া পিপাসা ও ক্ষুধা শান্তি করিল। শ্রান্তি দূর করিয়া চলিয়া গেল । ১১ শবরসৈন্তের মধ্যে এক বৃদ্ধ সে দিন কিছুই শিকার করিতে পারে নাই ও মাংস প্রভৃতি কিছুই পায় নাই ; সে উহাদিগের সঙ্গে না গিয়া তরুতলে দণ্ডায়মান থাকিল। সকলে দৃষ্টিপথের অগোচর হইলে, রক্তবর্ণ দুই চক্ষু দ্বারা সেই তরুর মূল অবধি অগ্রভাগ পৰ্য্যন্ত এক বার নিরীক্ষণ করিল। তাহার নেত্রপাতমাত্রেই কোটরস্থিত পক্ষিশাবকদিগের প্রাণ উড়িয়া গেল। হয়, নৃশংসের অসাধ্য কি আছে ! সোপানশ্রেণীতে পাদক্ষেপপূর্বক অট্টালিকায় যেরূপ অনায়াসে উঠা যায়, নৃশংস কণ্টকাকীর্ণ দুরারোহ সেই প্রকাগু মহীরুহে সেইরূপ অবলীলাক্রমে আরোহণ করিল এবং কোটরে কর প্রসারিত করিয়া পক্ষিশাবকদিগকে ধরিয়া একে একে বহির্গত করিয়া প্রাণসংহারপূর্বক ভূতলে নিক্ষেপ করিতে লাগিল। পিতার একে বৃদ্ধ বয়স তাহাতে অকস্মাৎ এ বিষম সঙ্কট উপস্থিত হওয়াতে নিতান্ত ভীত হইলেন । ভয়ে কলেবর দ্বিগুণ কঁাপিতে লাগিল এবং তালুদেশ শুষ্ক হইয়া গেল। ইতস্ততঃ দৃষ্টি নিক্ষেপ করিতে লাগিলেন কিন্তু প্রতীকারের কোন উপায় না দেখিয়া আমাকে পক্ষপুটে আচ্ছাদন করিলেন ও আপন বক্ষঃস্থলের নিম্নে লুকাইয়া রাখিলেন। আমাকে যখন পক্ষপুটে আচ্ছাদন করেন তখন দেখিলাম তাহার নয়নযুগল হইতে জলধারা পড়িতেছে। নৃশংস ক্রমে ক্রমে আমাদিগের কুলায়ের সমীপবৰ্ত্তী হইয়।
পাতা:কাদম্বরী (চতুর্থ সংস্করণ).djvu/৫২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।