সাম্য-সাম
ছায়াপথ হতে এসেছে আলোক, তপন উঠেছে হাসি’;
বারতা এসেছে পুলক-প্লাবনে ভূবন গিয়েছে ভাসি’!
নাচিছে সলিল, তুলিছে মুকুল, ডাকিয়া উঠিছে পিক,
বারতা এসেছে প্রভাত-পবনে—প্রসন্ন দশ দিক্।
কে আছ আজিকে অপনত মুখে পীড়িত অত্যাচারে?
কে আছ ক্ষুণ্ণ, কেবা বিষণ্ণ, অন্যায় কারাগারে?
যুগ যুগ ধরি কি করেছ, মরি, লভিতে কেবলি ঘৃণা?
পুরুষে পুরুষে হীনতা বহিতে, দহিতে কারণ বিনা!
এ বিপুল ভবে কে এসেছে কবে উপবীত ধরি’ গলে?
পশুর অধম অসুর-দন্তে মানুষেরে তবু দলে!
কণ্ঠে সাধিয়া ধন-সম্পুট, রত্নমুকুট শিরে,
কেহ নাহি আসে গর্ভ-নিবাসে, মানবের মন্দিরে;
তবে কেন হায় জগৎ জুড়িয়া, এ বিপুল খল-পণা,
বেড়া দিয়ে দিয়ে মুক্ত বাতাসে বধিবার জল্পনা!
কৰ্ম্মে যাদের নাহি কলঙ্গ, জন্ম যেমনি হ’ক,
পুণ্য তাদের চরণ-পরশে ধন্য এ নরলোক।—
হ’ক্ সে তাহার বরণ কৃষ্ণ, অথবা তাম্র-রুচি,
নিৰ্ম্মল যার হৃদয় সে-জন শুভ্ৰ হ’তেও শুচি।
ব্যবসা যাদের রজত মূল্যে নিজ পদধূলি দান,
অস্তে উদয়ে ব্যস্ত করিতে আপনার স্তুতি-গান,
যাদের কৃপায় রন্ধন-শালে ধৰ্ম্ম পেলেন ঠাঁই,
হায় পরিতাপ! ত্রিলোক বলিছে তাহাদের জাতি নাই!