ভুবন ব্যাপিয়া স্লেচ্ছ যবন শূদ্র বসতি করে,
সাত সমুদ্র তাহাদেরি হায় পাদোদকে আছে ভ'রে;
বিপুল বিশ্বে এক গণ্ডূষ জল পাওয়া আজি দায়
ধৰ্ম্ম আছেন রন্ধন-শালে;—জতিটাই নিরুপায়।
যাহাদের ছায়া ছুঁইলেও পাপ, পবন অৰ্ব্বাচীন,
তা’দেরি চরণধুলি’ তুলি দেয় মস্তকে নিশিদিন;
নিশ্বাস নিতে মনে হয়, সে যে অজাতির উচ্ছিষ্ট!
কৰ্ম্ম হ’তেছে পণ্ড নিয়ত ধৰ্ম্ম হ’তেছে ক্লিষ্ট।
জগতের চুড়া এ জাতির যদি পামীরে হইত বাস,—
তা’ হ’লে হ’ত না প্রতি নিশ্বাসে নিতে পামরের শ্বাস।
স্নেচ্ছের শ্রমে চারি আশ্রম ভাঙিয়া পড়িছে নিতি,
পীড়ায় আতুর সংহিতা সব পুড়িয়া যেতেছে স্মৃতি।
বর্ণোত্তমে বর্ণে তাহারা করিয়াছে পরাজয়,
নিষ্ঠার বলে প্রতিষ্ঠা তার আজিকে ভুবনময়;
ব্ৰাহ্মণ শুধু মরিছে বহিয়া উপবীত অবশেষ,
রাজ্যবিহীনে লজ্জা দিতেছে পৈতৃক রাজবেশ।
ঊর্ধ্বে রয়েছে উদ্যত সদা জগন্নাথের ছড়ি,
সমান হ’তেছে শূদ্র ও দ্বিজ সবে তার তলে পড়ি’।
খনির তিমিরে কা’রা কি কহিছে, ওগো শোন পাতি কান।
অনেক নিম্নে পড়ি’ আছে যারা শোন তাহাদেরো গান।
দূর সাগরের হল্হলা সম উঠিছে তাদের বাণী,
বহু সন্তাপ, বহু বিফলতা, অনেক দুঃখ মানি;
অশ্র হারায়ে রক্ত-নয়ন জলিছে আগুন হেন,
পঙ্কিল ভাষা, স্বল্প বচন,—নাহি সে মানুষ যেন!
পাতা:কাব্য-সঞ্চয়ন (সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত).djvu/৩০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।