তবে কেন মিছে কথার কলহ, দূর কর কলরব,
আর’ কাছাকাছি আসুক্ মানুষ—আসুক্ মহোৎসব!
কে রয়েছে বলী, আৰ্ত্ত অবলে হাতে ধরি’ লও তুলি’;
জ্ঞানী, অধিকার বাড়াও নরের নূতন দুয়ার খুলি’;
মানুষেরে যদি মনে জান’ পর, শিক্ষা বিফল তবে,
রাখিবার বল মারিবার চেয়ে বহু গুণে শ্রেয় ভবে।
দেবতার ঘরে গণ্ডী রেখনা—খোল’ মন্দির দ্বার,
দেবতা কাহার’ নহে তৈজস, দেবভূমি সবাকার;
নরকের ভয় দেখায়ে মামুষে খৰ্ব্ব ক’র’না তবে,
মানুষেরি প্রেমে হউক ধন্য, লভুক্ পুণ্য সবে।
কে জানে, কেমন পরলোক, যাহে আকাশ রয়েছে ঢাকি’!
মূক মরি’ সেথা পায় কি গো বাণী, অন্ধ কি পায় আঁখি?
উন্মাদ সেথা লভে কি শান্তি? পুষ্টি লভে কি ভ্রূণ?
বন্ধু সেথায় বন্ধুর মুখ দেখিতে কি পায় পুনঃ?
পুণ্যের ক্ষয়ে এই লোকালয়ে জন্ম কি হয় আর?
কিবা সে পুণ্য? কিবা সে পাতক? মূল কোথা ছিল কা’র?
সৃষ্টির সাথে কে সৃজিল মায়া? কে দিল বৃত্তি যত?
কে করিল হায় মনু সন্তানে স্বার্থ সাধনে রত?
তিমিরের পরে তিমিরের স্তর, দৃষ্টি নাহিক চলে,
মৃত্যু সে কথা গুপ্ত রেখেছে, জীবিতে কভু না বলে;
যে বলে ‘জেনেছি’ ভণ্ড সে জন, নহে উন্মাদ ঘোর,
সে জ্ঞান আনিতে পারে ইহলোকে জন্মেনি হেন চোর।
ছায়া পথ জুড়ি’ আলোক বিথারি’ কত না তপন শশী,
শান্তির মাঝে অচিন্ত্য বেগে চলিয়াছে উচ্ছ্বসি’;
পাতা:কাব্য-সঞ্চয়ন (সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত).djvu/৩৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।