জানু পাতি’ কেন অবনত শিরে রয়েছ নীরবে, হায়,
দাঁড়াও উঠিয়া, ঘৃণ্য কীটেরা পড়ুক লুটিয়া পায়।
দাঁড়াও হে ফিরে উন্নত শিরে হাসি’ উজ্জ্বল হাসি,
হাতে হাতে ধরি গুণী, জ্ঞানী, বীর, শিল্পী, রাখাল, চাষী;
জগতে এসেছে নূতন মন্ত্র বন্ধন-ভয়-হারী,
সাম্যের মহাসঙ্গীত নব গাহ মিলি’ নরনারী!
“আমরা মানিনা মানুষের গড়া কল্পিত যত বাধা,
আমরা মানিনা বিলাস-লালিতা ঘোড়ার আরোহী গাধা,
মানিনা গির্জ্জা, মঠ মন্দির, কল্কি, পেগম্বর,
দেবতা মোদের সাম্য-দেবতা অন্তরে তা’র ঘর;
রাজা আমাদের বিশ্ব-মানব, তাহারি সেবার তরে,
জীবন মোদের গড়িয়া তুলেছি শত অতন্দ্র করে;
আশা আমাদের সূতিকা ভবনে বিরাজিছে শিশুরূপে
তা’রি মুখ চেয়ে জগতের বাহু খাটিয়া চলেছে চুপে!
ধনের চাপে যে পাপের জনম একথা আমরা জানি,
দণ্ডের চেয়ে দয়ার ক্ষমতা অধিক বলেই মানি;
দোষীরে আমরা নাশিতে না চাহি, মানুষ করিতে চাই,
গত জনমের পাতকী বলিয়া আতুরে দূষি’ না ভাই।
যা’র কোলে শিশু হাসে আহ্লাদে শিশু-হিয়া জানি তা’র,
যা’র স্নেহে ভূমি হয় গো সফলা ভূমি তা’রি আপনার।
মানিনা অন্য বিধি ও বিধান মানিনা অন্য ধারা,
মানিনা তা’দের সংসারে যা’রা করেছে দুঃখ-কারা।
প্রেমের আদর জানি গো আমরা জ্ঞানের মূল্য জানি,
শক্তি যখন শিবের সেবিকা তখনি তাহারে মানি;
পাতা:কাব্য-সঞ্চয়ন (সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত).djvu/৩৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।