পাতা:কাব্য-সুন্দরী - পূর্ণচন্দ্র বসু.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কপালকুণ্ডলা । । 86 আর একবার তঁাহার বন্য প্ৰকৃতি প্ৰবলা হইয়া উঠিল । তিনি অসঙ্কুচিত চিত্তে একাকিনী বনদেবীর ন্যায় নিৰ্ভয়ে রজনীযোগে নিবিড় বনমধ্যে প্ৰবেশ করিলেন । প্ৰবেশ করিব মাত্ৰ জ্যোৎস্নালোকে বনমধ্যে পূর্বকার স্মৃতি সমুদায় উদ্দীপিত হইয়া উঠিল । তিনি আর একবার সেই সমুদ্র তীরস্থ স্বাধীন, বনবাসিনী কপালকুণ্ডলা বলিয়া আপনাকে ভাবিতে লাগিলেন । বনমধ্যে যথেচ্ছা বিচরণ করিলেন। সংসার সমুদায় ভুলিয়া গেলেন, শ্যামাসুন্দরীকে পৰ্য্যন্ত ভুলিয়া গেলেন। তাহার, ঔষধি উন্মুলিত হইল না । সম্মুখে অগ্নিবিভা দেখিয়া । পূর্বকার বনাশ্রম মনে পড়িল। কৌতুহল-পরায়ণ কপালকুণ্ডলা সেই আলোকের অভিমুখীন হইতে লাগিলেন। কে যেন কাহার সহিত গম্ভীর ভাবে কথা কহিতেছে। কপালকুণ্ডলা আর একবার প্রকৃষ্টরূপে বনবাসিনী হইয়া গেলেন । তিনি নবকুমারের গৃহ মধ্যে প্ৰবেশ করিলেন বটে, কিন্তু প্ৰবেশ করিয়াও আর সংসারিণী হইতে পারিলেন না । শ্যামাসুন্দরীর পার্শ্ববৰ্ত্তিনী হইয়াও শুষ্ঠামা সুন্দরীকে ভুলিলেন, নবকুমারকে ভুলিলেন। তিনি সমুদ্র, কানন, কাপালিক, ও কালীমূৰ্ত্তির স্বপ্ন দেখিতে লাগিলেন। স্বপ্ন দেখিতে লাগিলেন “যেন সেই পূৰ্ব্বদৃষ্ট সাগর হৃদয়ে তরণী আরোহণ করিয়া যাইতেছিলেন। তরণী সুশোভিত ; তাহাতে বসন্ত-রঙ্গের পতাকা উড়িতেছে ;