কপালকুণ্ডলা &१ হইয়াছিল। ঈষৎ অনুরাগ মাত্ৰ কি তাহাদিগকে সহসা বিদূরিত করিতে পারে ? এই সংসারানভিজ্ঞ সরলা নব-প্ৰণয়িনী কপালকুণ্ডলার সহিত, ঘোর-বিষয়িণী চতুরা প্রেমবৃদ্ধ লুৎফউন্নিসার কেমন সম্পূৰ্ণ বৈপরীত্য ভাব ! কপালকুণ্ডল সরলতায় গৌরবান্বিতা, লুৎফ-উন্নিসা গৌরবের ভগ্নাবশেষ। কপালকুণ্ডলা নবোদিত পূৰ্ণচন্দ্ৰমা, লুৎফ-উন্নিসা হ্রস্বতেজ অস্তগামী সূৰ্য্য । একজন জীবন-পথে হািদয়ালোক সহ স্নিগ্ধমূৰ্ত্তিতে উদিত হইতেছেন, অন্য জন হৃদয়তেজ সঙ্কীর্ণ করিয়া জীবন পথে এক প্ৰকার অস্তগামী হইতেছেন। অস্তাচলে অধোগামী হইয়া মনে করিতেছেন আবার উদয়াচলে নববিভায় সমুজ্জ্বলিত হইবেন, চন্দ্ৰমাকে শীঘ্ৰ বিদূরিত করিয়া দিবেন। কাপালিক এমত সময়ে সন্ধ্যাগগনে ঘটনাজালের মেঘ আনিয়া দিল ; ঝড় উঠিল। মেঘমণ্ডলী গগন দেশে ব্যাপ্ত হইল । চন্দ্র ডুবিল, সূৰ্য্যও অদৃশ্য হইল। সকলই মেঘময়, কিছুই দৃষ্ট হয় না ; নবকুমার কেবল চন্দ্ৰ-সন্নিকট ঐ তারকা মাত্র রূপে একাকী মেঘপার্শ্বে অস্পষ্ট ঝল ঝলা করিতেছেন । ইহাই কপালকুণ্ডলার সমাপ্তি-মহান সমাপ্তি । এই গগনদেশে দৃষ্টিপাত করিলে কাহার মন না গভীর ভাবে পূর্ণ হয় ? বাহ্য-মেঘাড়ম্বর ও অন্ধকার কাহার মনে না প্ৰবেশ করে ? কে না চন্দ্ৰমালোকের অভাব জ্ঞান করেন ? এই গম্ভীর সমাপ্তি- এই গৰ্ত্তীর
পাতা:কাব্য-সুন্দরী - পূর্ণচন্দ্র বসু.pdf/৬১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।