পাতা:কাব্য-সুন্দরী - পূর্ণচন্দ্র বসু.pdf/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুন্দনন্দিনী । । WS) সুস্পষ্ট দেখাইয়া দিয়া গিয়াছেন, যে তিনি তীক্ষদৃষ্টি সমালোচকের জন্য আর কিছুই রাখিয়া যান নাই । বঙ্গের অন্ধ অন্তঃপুরীমধ্যে যে সকল কুলকামিনী রমণীরত্ন জন্মে, পৃথিবীর আর কোনখানে সেরূপ জন্মে। কি না সন্দেহ । অনেক কারণে এখানে অনেক রমণী পতিপরায়ণতার পরাকাষ্ঠ প্ৰাপ্ত হয়। ততদূর পাতিব্ৰত্য অন্যদেশের কুল কামিনী সতীতে প্ৰত্যাশা করা যাইতে পারে না । সূৰ্য্যমুখী এদেশে তত দুল্লভ নহে, কিন্তু সূৰ্য্যমুখী অন্যদেশে নিশ্চয় সুদুল্লাভা ; তদপেক্ষা কমলমণি, এবং কমলমণি অপেক্ষা কুন্দনন্দিনী । সূৰ্য্যমুখীর পাতিব্ৰত্য কায়মনোবাক্যে প্ৰকাশিত হইয়াছিল, কমলমণি একদিন সুৰ্য্যমুখীকে ও পাতিব্ৰত্য শিক্ষা দিয়াছিলেন। কুন্দ নন্দিনীর পাতিব্ৰত্য কায়মনোবাক্যে প্ৰকাশিত নহে বটে, কিন্তু তজ্জন্য কিছুতেই নুন নহে, বরং তজ্জন্যই অধিকতর উজ্জ্বল, বিশুদ্ধ, এবং পবিত্ৰ বলিয়া প্ৰতীত হয়। সূৰ্য্যমুখী অন্যদেশে দুল্লভ, কিন্তু কুন্দনন্দিনী বঙ্গদেশেও দুল্লভ। এখানে যদি দুই শতের মধ্যে একজন সুৰ্য্যমুখী থাকে, পঞ্চশতের মধ্যে একজন কমলমণি থাকে, তবে সহস্ৰ বঙ্গগুহবধূর মধ্যে একজন কুন্দনন্দিনী আছে কি না সন্দেহ । বঙ্গ গৃহবধুর ভীরুতা, নম্রতা, সরলতা, অনভিজ্ঞতা ও কোমলতা যতদূর অনুমান করা যাইতে পারে কুন্দনন্দিনীর ততদুর ছিল। বাস্তবিক কুন্দনন্দিনী মৃদু প্ৰকৃতি বঙ্গগৃহবধুর অবয়বী কল্পনা ।