পাতা:কালিদাস - রাজেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৪০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইরাবতী । R79-. তিনি প্ৰাণ দিয়া রাজাকে ভাল বাসিতেন ; রাজা ব্যতিরিক্ত সংসারে তঁহার অন্য আকর্ষণ ছিল না, তিনি ভ্ৰমক্রমেও কখনো ভাবেন নাই যে, তঁহার হৃদয়-দেবতা “অন্য-সংক্রান্ত-হৃদয়’ হইতে পারেন, ইরাবতী-বল্লভ তদীয় অর্পিত হৃদয়ের অন্যত্র পুনর্দান করিতে পারেন । নারী-হৃদয়ের এই কমনীয়তায় রাজা অধিকতর বিমুগ্ধ হইয়াছিলেন। যখন ইরাবতী ধারিণীর সহচরী, তখন বিদূষকের কৌশলেই তিনি প্ৰথমে রাজ-নয়ন-পথ-বৰ্ত্তিনী হইয়াছিলেন, বিদূষকই তাহার বাঞ্ছিত পূরণ করিয়াছিলেন ; এইজন্য, তিনি, কৃতজ্ঞ-হৃদয়ে, সতত লোলুপ বিদূষক-ব্ৰাহ্মণকে কত প্রকার মিষ্টান্ন প্ৰদান করিতেন, হৃদয়ের গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিতেন। হতভাগিনী সরল-প্ৰাণা ইরাবতী বুঝিতেন না যে, যে গড়িতে পারে, সে ভাঙ্গিতেও পারে। তিনি বুঝিতেন না যে, যে বিদূষক তাহাকে পরিচারিকা হইতে রাণী । করিতে পারিয়াছে, তাহার ক্ষমতা কত, প্রয়োজন বোধ করিলে, সেই বিদূষকই যে আবার তঁহার সুখস্বপ্ন ভাঙ্গিয়া দিতে পারে, ইহা তঁহার জ্ঞান ছিল না। তিনি সকলকেই বিশ্বাসের চক্ষে দেখিতেন। সংসারে তাঁহার সুখের পথে কণ্টক জন্মিতে পারে, এ কল্পনাও তিনি করিতে পারিতেন না। ধারিণীর সহচরী যখন বলিয়াছিল যে, মালবিকা, দেখিতেছি, ইতিমধ্যেই সকল বিষয়ে ইরাবতীকে অতিক্রম করিল,-তখন হইতেই সামাজিকগণ বুঝিয়াছেন যে, ইরাবতীর সুখ-স্বপ্ন-ভঙ্গের আর বিলম্ব নাই। কিন্তু মুগ্ধ ইরাবতী ঘূণাক্ষরেও ইহা জানিতে পারেন নাই।