এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
ধর্মার্থে মোক্ষদে দেবি নিতং মে বরদা ভব।
শকুনির সঙ্গে দিল অনেক ব্রাম্ভণ। চতুর্দ্দোলে কন্যা দিল করিয়া সাজন।। গান্ধারী শুনিল অন্ধবরে সমর্পিল। আপন কুকর্ম্ম ভাবি চিত্তে ক্ষমা দিল।। শুক্ল পট্টবস্ত্র দেবী শতপুরু করি। আপন নয়নদ্বয় বান্ধিল সুন্দরী।। পতি প্রীতি হেতু সতী মুদিল নয়ন। পতিব্রতা গান্ধারী সে জগতে ঘোষণ।। শকুনি চলিল সেই ভগিনী সংহতি। হস্তিনানগর উত্তরিলা শীঘ্রগতি।। ধৃতরাষ্ট্রে সমর্পিলা ভগিনী রতন। নানা রত্ন অলঙ্কার করিয়া ভূষণ।। হস্তী অশ্ব রথ রত্ন করি বহু দান। শকুনি আপন দেশে করিল পয়ান।। জ্যেষ্ঠের বিবাহ দিয়া গঙ্গার নন্দন। পাণ্ডুর বিবাহ হেতু সচিন্তিত মন।। শূর নামে যাদব কৃষ্ণের পিতামহ। কুন্তী ভোজ নৃপতিরে বড় অনুগ্রহ।। পিতৃস্বসৃপুত্র কুন্তে অপুত্রক দেখি। পালিবারে দিল কন্যা পৃথা শশীমুখী।। পৃথারে আনিয়া বলে কুন্তী নরপতি। অতিথি শুশ্রুষা তুমি কর গুণবতী।। পিতৃ আজ্ঞা পেয়ে কন্যা পুজে অতিথিরে। কতকালে দুর্ব্বাসা আইল সেই ঘরে।। মুনিরাজে দেখি কন্যা পাদ্য অর্ঘ্য দিল। আপনার হস্তে দুই পদ প্রক্ষালিল।। করযোড় করি কুন্তী মুনি আগে রয়। দেখিয়া সন্তুষ্ট হৈল মুনি মহাশয়।। তুষ্ট হৈয়া বলিল দুর্ব্বাসা মহামুনি। এক মন্ত্র দিব তোমা লহ সুবদনি।। মন্ত্র জপি যেই দেবে করিবা স্মরণ। তোমার অগ্রেতে সেই আসিবে তখন।। এত বলি মন্ত্র দিয়া গেল মুনিবর। মন্ত্র পেয়ে কুন্তীদেবী হরিষ অন্তর।। পরীক্ষা করিতে মন্ত্র ভোজের নন্দিনী। মন্ত্র জপি স্মরণ করিল দিনমণি।। কুন্তীর স্মরণে তথা আসে দিনকর। সূর্য্য দেখি কুন্তী হৈল বিরস অন্তর।। করযোড় করি কুন্তী প্রণাম করিল। সবিনয়ে কুন্তীদেবী বলিতে লাগিল।। দুর্ব্বাসার মন্ত্র আমি পরীক্ষা কারণ। শেষ না গণিয়া করি তোমারে স্মরণ।। অপরাধ করিলাম অজ্ঞান মোহিত। বামা জাতি সদা দোষী ক্ষমিতে উচিত।। সূর্য্য বলে ব্যর্থ নহে মুনির বচন। ব্যর্থ নহে কন্যা কভু মম আগমন।। প্রথম লইয়া মন্ত্র আমারে ডাকিলে। তোর মন্ত্র ব্যর্থ হবে আমা না ভজিলে।। কুন্তী বলে কন্যা আমি শৈশব বয়সে। করিলে কুৎসিত কর্ম্ম লোকে অপযশে।। দিনকর বলে ভয় না করিহ মনে। মোর হেতু তোর নিন্দা না হবে ভুবনে।। প্রবোধিয়া কুন্তীকে সে অনেক প্রকার। বর দিয়া গেল সূর্য্য ভুঞ্জিয়া শৃঙ্গার।। তাঁর বীর্য্যে গর্ভে এক হইল নন্দন। জন্ম হৈতে অক্ষয় কবচ বিভূষণ।। লোকে খ্যাত হবে বলি হইল বিরস। কুলেতে কলঙ্ক কর্ম্ম লোকে অপযশ।। এতেক চিন্তিয়া কুন্তী পুত্র লৈয়া কোলে। তাম্রকুণ্ড করি ভাসাইয়া দিল জলে।। এক সূত সদা করে যমুনায় স্নান। ভাসি যায় তাম্রকুণ্ড দেখি বিদ্যমান।। ধরিয়া আনিয়া দেখে সুন্দর কুমার। আনন্দে লইয়া গেল গৃহে আপনার।। রাধা নামে ভার্য্যা তার পরমা সুন্দরী। অপুত্র আছিল পালিল পুত্র করি।। বসুসেন নাম করি থুইল তাহার। দিনে দিনে বাড়ে যেন চন্দ্রের আকার।। সর্ব্বশাস্ত্রে বিশারদ হৈল মহাবীর। অহর্নিশি আরাধনা করয়ে মিহির।। জিতেন্দ্রিয় মহাবীর ব্রতে অনুরত। ব্রাম্ভণেরে দান বীর দেয় অনুব্রত।।